বাংলাদেশিদের সঙ্গে ইউক্রেনের সীমান্ত বাহিনীর বর্বরতা!

আর্ন্তজাতিক ডেস্ক: ইউক্রেনে রাশিয়ার বিশেষ সামরিক অভিযানের সপ্তম দিন চলছে। যুদ্ধের দামামায় ইতোমধ্যে অস্ট্রেলিয়া, ইতালি, ইসরায়েল, নেদারল্যান্ডস, এস্তোনিয়া, জাপান, ভারত, বাংলাদেশসহ বহু দেশ নিজেদের নাগরিকদের ইউক্রেন ছাড়তে বলেছে।

তবে দিন যতই যাচ্ছে রাজধানী কিয়েভসহ বিভিন্ন শহরে অবস্থানরত প্রবাসী নাগরিকদের জীবন নিয়ে পালিয়ে ইউক্রেন-পোল্যান্ড সীমান্তে যাওয়ার সংখ্যা ততই বাড়ছে। যদিও অভিযোগ উঠেছে, ইমিগ্রেশন পয়েন্টে ইউক্রেনীয় নাগরিকরা যত সহজে চেকপোস্ট পার হতে পারছেন, সেভাবে বর্ডার ক্রস করতে পারছেন না বাংলাদেশসহ কিছু দেশের নাগরিকরা।

সীমান্তের ইউক্রেন অংশে ভোগান্তির কথা জানতে চাইলে বাংলাদেশি নাগরিক মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, গত সাত দিনে এক মুহূর্তও ঘুমাইনি। শুধু পানি খেয়েছি, মাঝে মধ্যে পাউরুটি। এরপর সীমান্তের ইউক্রেন অংশের ইমিগ্রেশনে যে হয়রানির শিকার হলাম, তা অবর্ণনীয়। জীবনে অনেক কষ্ট করেছি, কিন্তু এ ধরনের কষ্ট আর হয়নি।

তিনি বলেন, বাসা থেকে কাপড় নিয়ে বেরিয়েছিলাম। কিন্তু ব্যাগ-সার্টিফিকেট সব চুরি হয়ে গেছে। এখন এক কাপড়ে সাতদিন। এরকম দিন জীবনে আর কখনো আসবে বলে মনে করি না। এখানে সীমান্ত পার হতে ছাড়পত্র লাগে। কিন্তু এই কাজে এত সময় লাগছে যে সারাদিনে ২৫-৩০ জন সেটা পাচ্ছে। এরা পাসপোর্ট চেক করছে না, শুধু একটা আইডি কার্ড চেক করতেই এত সময় লাগছে।

জাহাঙ্গীর জানান, তিনি পোল্যান্ডের রাজধানী ওয়ারশ যাবেন। সেখানে তার ভাই ও বন্ধুরা রয়েছেন।

ডয়চে ভেলে জানিয়েছে, পোল্যান্ডের মেডিকা বর্ডার থেকে শেমিশেল শহরে নিয়মিত শাটল বাস চলছে। দেশটির বাংলাদেশ দূতাবাস এক বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। সেখানে বলা হয়েছে, যারা বর্ডার পার হয়ে ঢুকছেন, তাদের খাবার ও পানি খেয়ে দ্রুত শাটল বাসে শেমিশেল শহরে চলে যেতে হবে। সেখান থেকে ট্রেনে ওয়ারশ যাওয়া যাবে সহজে। আবার ওখানে পোল্যান্ড সরকারের শেল্টার হাউজও রয়েছে। সেখানে অল্প সময়ের জন্য থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

গোলাম রব্বানী সরকার নামে আরেক বাংলাদেশি শিক্ষার্থী বলেন, আমি জানুয়ারি চার তারিখ স্টুডেন্ট ভিসায় ইউক্রেনে এসেছি। যেহেতু বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে বলা হয়েছে, সেহেতু যুদ্ধ শুরু হলে আমরা রওনা দিই। দূতাবাস থেকে অনেক সহযোগিতা করা হয়েছে। তবে ভোগান্তির শিকার হয়েছি ইউক্রেন অংশের ইমিগ্রেশনে। আমাকে ১৭ ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে।

এদিকে পোল্যান্ডে প্রবেশ করার পর শেমিশেল শহরের অদূরে সেন্ট্রাল ট্রেন স্টেশনে অসংখ্য মানুষ অবস্থান নিয়েছে। সেখানে অনেক বাংলাদেশি নাগরিক রাত কাটাচ্ছেন। তারা অভিযোগ করছেন, তাদের ইউক্রেন থেকে পোল্যান্ড আসতে সময় লাগছে। এর আগে তাদের প্রত্যেককে ৩০-৩৫ কিলোমিটার হাঁটতে হচ্ছে। এতে নারী ও শিশুরা ক্লান্ত হয়ে পড়েছে। তবে মঙ্গলবার পর্যন্ত দূতাবাস থেকে কতজন বাংলাদেশি ইউক্রেন সীমান্ত দিয়ে পোল্যান্ডে পৌঁছেছেন তার পরিসংখ্যান জানানো হয়নি।

সূত্র:বাংলানিউজ২৪

আইএনবি/বিভূঁইয়া