স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে বাগাতিপাড়ায় এমপির সমাবেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক
করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় সারাদেশে সর্বশক্তি দিয়ে কাজ করছে সরকার। কয়েকদফা সাধারণ ছুটি বাড়িয়ে নিয়ন্ত্রণে সুফল না পেয়ে আবারও দেশের বিভিন্নস্থানে লকডাউন করে দেওয়া হচ্ছে। সামাজিক অনুষ্ঠান ও সভা সমাবেশ বন্ধ করে রেখেছে রাজনৈতিক দলগুলো। ইতমধ্যে সরকারের মন্ত্রী থেকে শুরু করে কর্মকর্তারাও আক্রান্ত হচ্ছেন। পরিস্থিতি মোকাবেলায় ঝুঁকি নিয়ে কাজ করেও হিমশিম খাচ্ছে মাঠ প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের কর্মকর্তার-কর্মচারীরা।
সরকার প্রধানের এমন কড়া নির্দেশনা উপেক্ষা নাটোরের বাগাতিপড়ায় দলীয় কয়েকশ নেতা-কর্মী নিয়ে সৌজন্য সাক্ষাতে মিলিত হয়েছেন নাটোর-১ (লালপুর-বাগাতিপাড়া) আসনের সংসদ সদস্য শহিদুল ইসলাম বকুল।
রোববার বিকেলে জামনগর ইউনিয়ন পরিষদে ও কালিকাপুর বাজারে স্থানীয় নেতা কর্মীদের সাথে এই সৌজন্য সাক্ষাত করেন তিনি। এসময় উপজেলা চেয়ারম্যান অহিদুল ইসলাম গোকুল, জামনগর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল কুদ্দুস, অধ্যাপক শাহ আলম, মাসুদ মাস্টার, যুবলীগ নেতা আমিরুল ইসলাম টারজানসহ কয়েকশ নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। করোনার এই ভয়াবহ পরিস্থিতিতে সংসদ সদস্যর এমন কর্মকান্ডে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন এলাকার নিজ দলের নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষ।
জানতে চাইলে উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক সেকেন্দার আলী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর করোনা মোকাবেলায় দিনরাত পরিশ্রম করে চলেছেন। তার নির্দেশনা উপেক্ষা করে সংসদ সদস্যের এমন কর্মকান্ডে আমি হতবাক। বাগাতিপাড়া পৌরসভার দুই কিলোমিটারের মধ্যে করোনা রোগী সনাক্ত হয়েছে। এমপি সাহেব নিজে সামাজিক দুরুত্ব মানলেও সাধারণ নেতাকর্মীরা স্বাস্থ্যবিধি বা সামাজিক দুরুত্ব কোনটাই মানছেনা। ঠিক এই মূহুর্তে তার এ ধরণের সমাবেশে করোনা পুরো উপজেলায় ছড়িয়ে পড়তে পারে। উপজেলা আওয়ামীলীগের নেতা হিসেবে এ কর্মকান্ডে আমি বিব্রত।
সমাবেশে অংশ নেওয়া জামনগর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল কুদ্দুস  বলেন, মাননীয় সংসদ সদস্য করোনায় বেকার হওয়া জনগণের সাথে মতবিনিময় ও তাদের খোজ খবর নিতে এসেছিলেন। আমার ইউনিয়ন পরিষদে সে সভা হয়েছে সেখানে স্বাস্থ্য বিধি মানা হয়েছে বলে দাবী করেন তিনি।
জনসমাবেশে অংশ নেওয়া বাগাতিপাড়া উপজেলা চেয়ারম্যান ও নাটোর-১ (লালপুর-বাগাতিপাড়া) আসনের সংসদ সদস্য শহিদুল ইসলাম বকুল এর ভাই অহিদুল ইসলাম গোকুল বলেন, মাননীয় সংসদ সদস্য একটি কাজে সেখানে গিয়েছিলেন। সেখানে বসলে জনগন চলে আসে। আমরা তাদের স্বাস্থ্য বিধি মেনে দাড়াতে বলেছি। সেখানে মুলত আমাদের বক্তব্যের সিংহভাগ ছিল জনগণকে সচেতন করার জন্য।
জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রিয়াংকা দেবী পাল বলেন, সংসদ সদস্য যেখানে যাবেন সেখানে কিছু মানুষ সমবেত হবে এটাই স্বাভাবিক। জামনগরে কোন সভা হবে বলে আমি অবগত ছিলাম না। বেসরকারী কোন অনুষ্ঠান হলে আমরা সেখানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা ন্ইে।
জানতে চাইলে নাটোর-১ (লালপুর-বাগাতিপাড়া) আসনের সংসদ সদস্য শহিদুল ইসলাম বকুল বলেন, করোনা কালীন পরিস্থিতিতে আমি স্বাস্থ্যবিধি মেনে কাজ করে আসছি। ঐ এলাকায় একটি বিশেষ প্রয়োজনে গিয়েছিলাম। সেখানকার কিছু মানুষ কথা বলার আগ্রহ প্রকাশ করলে আমি নিরাপদ দুরুত্ব মানার কথা বলি। প্রথমে চার ফুট দুরত্বে চেয়ার দেওয়া হয়। কিন্তু পরবর্তীতে লোক সমাগম বেশী হয়ে গেলি আমি সেখান থেকে চলে আসি।