নওগাঁয় আওয়ামী লীগের অফিস ভাঙচুর, এএসপিসহ আহত ১৫

নওগাঁয় প্রতিনিধি: নওগাঁয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে জেলা আওয়ামী লীগের অফিস ভাঙচুর করা হয় এবং এএসপি, সাংবাদিক ও পুলিশসহ অন্তত ১৫জন আহত হয়েছেন।

শনিবার (৩ আগস্ট) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে শহরের সরিষাহাটির মোড় এলাকায় এই সংঘর্ষ ঘটে।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থী ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সূত্রে জানা যায়, পূর্বঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে শহরের কাজীর মোড় এলাকায় দুপুর ১২টার দিকে শিক্ষার্থীরা জড়ো হয়। সেখান থেকে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল বের করে শহরের মুক্তির মোড়ের দিকে এগোতে থাকে। মিছিলটি মুক্তির মোড় হয়ে সরিষাহাটির মোড়ে আওয়ামী লীগের পার্টি অফিসের সামনে পৌঁছালে, সেখানে অবস্থানরত ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু হয়। এক পর্যায়ে উত্তেজিত শিক্ষার্থীরা আওয়ামী লীগের অফিস ভাঙচুর করে। এ সময় কয়েকটি গাড়ি, মোটরসাইকেল ও চেয়ার ভাঙচুর করা হয়। একপর্যায়ে পুলিশ সেখানে টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে উভয়পক্ষকে ছত্রভঙ্গ করে দেয়।

সংঘর্ষের ঘটনায় ইটের আঘাতে নওগাঁর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গাজিউর রহমান, শিক্ষার্থী, অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগো নিউজের নওগাঁ প্রতিনিধি মনিরুল ইসলাম শামীমসহ অন্তত ১৫জন আহত হয়েছেন। সংঘর্ষের পর শিক্ষার্থীরা আবার জমায়েত হয়ে মুক্তির মোড়ে অবস্থান নিয়ে সেখানে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। শিক্ষার্থীরা রাস্তার ওপর বসে প্রায় এক ঘণ্টা ধরে সড়ক অবরোধ করে রাখেন। দুপুর দেড়টার দিকে পরবর্তী দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা আজকের আন্দোলন শেষ করেন।

নওগাঁ জেনারেল হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত আবাসিক চিকিৎসক আবু আনসারী বলেন, সংঘর্ষের ঘটনায় আহত হয়ে দুপুর ৩টা পর্যন্ত ১৫জন রোগী হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। তাদের সবার মাথায় ইটের আঘাত লেগেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ ঘটনায় বর্তমানে হাসপাতালে ২জন ভর্তি আছেন। আশিক (১৯) নামে নিয়ামতপুর উপজেলার একজন শিক্ষার্থীর মাথায় গুরুতর আঘাত পাওয়ায় তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।

নওগাঁর পুলিশ সুপার মুহাম্মদ রাশিদুল হক বলেন, মিছিলের শুরু থেকেই পুলিশ সহনশীল আচরণ করেছে। শিক্ষার্থীদের যাতে কোনও ক্ষতি না হয়, সেজন্য তাদেরকে নিরাপত্তা দিয়ে যাচ্ছিল পুলিশ। কিন্তু মিছিলটি আওয়ামী লীগের পার্টি অফিসের কাছে পৌঁছালে মিছিল থেকে কিছু দুষ্কৃতকারী আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের লক্ষ্য করে ইট ছোঁড়ে। এরপরই উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি হয়। ইটের আঘাতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গাজিউর রহমান হাতে আঘাত পেয়েছেন। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ও টিয়ারশেল ছোঁড়া হয়। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে বলে জানান এই কর্মকর্তা।

নওগাঁর জেলা প্রশাসক গোলাম মওলা জানান, শিক্ষার্থীদের কর্মসূচির শুরু থেকেই সতর্ক অবস্থানে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে থাকতে বলা হয়েছিল। প্রশাসনকে বলা হয়েছিল শিক্ষার্থীরা শান্তিপূর্ণভাবে তাদের কর্মসূচি চালিয়ে যাবে। এক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে কোনও বাধা দেওয়া হয়নি। সবাইকে শান্ত থাকতে বলা হয়েছিল।

আইএনবি/বিভূঁইয়া