তালেবানের অগ্রযাত্রা থামাতে আফগানিস্তানে কারফিউ জারি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: তালেবানরা যেন শহর দখল করতে না পারে, সে লক্ষ্যে প্রায় পুরো দেশেই কারফিউ জারি করেছে আফগান সরকার। রাজধানী কাবুল ও আরো দুটি প্রদেশ ছাড়া অন্য সব অঞ্চলে রাত ১০টা থেকে ভোর ৪টা পর্যন্ত সব ধরনের চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক বাহিনী দেশটি থেকে অবস্থান সরিয়ে নেওয়ার পর গত দুই মাসে আফগান সরকার ও তালেবানের মধ্যে সংঘাত বেড়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, জঙ্গিগোষ্ঠীটি আফগানিস্তানের প্রায় অর্ধেক অংশের দখল নিয়েছে।

আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সৈন্য প্রত্যাহার পরপরই তালেবানরা দেশটির সীমান্ত অঞ্চলসহ বেশকিছু এলাকা দখল করে। বেশ কয়েকটি প্রধান সড়কপথও দখল করেছে তারা। ২০ বছর আগে আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের আক্রমণের পর ক্ষমতাচ্যুত হয় কট্টর ইসলামপন্থী জঙ্গিগোষ্ঠী তালেবান।

আফগানিস্তানের অভ্যন্তরীণ মন্ত্রী এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, ‘সহিংসতা কমানো এবং তালেবানদের চলাচল সীমিত রাখার উদ্দেশ্যে ৩১টি প্রদেশে কারফিউ জারি করা হয়েছে।’ তবে কাবুল, পাঞ্জশির ও নানগারহার প্রদেশ এই কারফিউর আওতার বাইরে থাকবে।

তালেবানের অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকার কারণে এই সপ্তাহে কান্দাহার শহরে রক্তক্ষয়ী সংঘাত হয়েছে। জবাবে গত বৃহস্পতিবার মার্কিন সেনারা জঙ্গিদের অবস্থান লক্ষ্য করে বিমান হামলা করে। আগামী ৩১ আগস্ট আনুষ্ঠানিকভাবে আফগানিস্তানে মার্কিন কার্যক্রম সমাপ্ত হওয়ার কথা রয়েছে।

২০২১ সালের অক্টোবরে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন বাহিনী আফগানিস্তানের ক্ষমতা থেকে তালেবানদের উৎখাত করে। যুক্তরাষ্ট্রে ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বরের বিমান হামলার সঙ্গে জড়িত থাকা সংগঠন আল-কায়েদা ও দলটির নেতা ওসামা বিন লাদেনকে জঙ্গি সংগঠনটি সহযোগিতা করছিল।

প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সম্প্রতি মন্তব্য করেছেন যে, আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সেনা প্রত্যাহার যৌক্তিক কারণ তারা নিশ্চিত করেছেন যে আফগানিস্তান পশ্চিমাদের আক্রমণ করার পরিকল্পনা করা জঙ্গিগোষ্ঠীদের ঘাঁটি হতে পারবে না।

এই মাসের শুরুতে বাগরাম বিমানঘাঁটি ত্যাগ করে মার্কিন সেনাসদস্যরা। আফগানিস্তানে মার্কিন কার্যক্রমের প্রধান কেন্দ্র ছিল এই বাগরাম ঘাঁটি। যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থার বিশেষজ্ঞদের তৈরি এক প্রতিবেদনে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয় যে, ছয় মাসের মধ্যে তালেবান আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল করতে পারে।
সূত্র : বিবিসি বাংলা

আইএনবি/বিভূঁইয়া