কৃষকরা এগোচ্ছে দিল্লি অবরুদ্ধ করতে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ভারতের বিভিন্ন রাজ্য থেকে দিল্লি জড়ো হয়েছেন কৃষকরা। এরই মধ্যে দিল্লিতে প্রবেশের জাতীয় সড়ক অবরোধ করেছে তারা। দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ প্রস্তাব দিয়েছিলেন যে, ৩ ডিসেম্বর সরকারের সঙ্গে কৃষকদের আলোচনা নির্ধারিত রয়েছে। কৃষকরা সরকারের ঠিক করে দেওয়া ময়দানে সরে গেলে তার আগেই আলোচনা হতে পারে।

রবিবার সরকারের এই প্রস্তাব খারিজ করে কৃষক সংগঠনের নেতারা জানিয়েছেন, তারা সরকারের মর্জিমাফিক বুরারি ময়দানে সরছেন না। কারণ সেটা আসলে খোলা জেলখানা। তার বদলে দিল্লিতে প্রবেশের পাঁচটি রাস্তাতেই অবরোধ করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।

কৃষক নেতাদের দাবি, তাদের কাছে চার মাসের রসদ রয়েছে। নরেন্দ্র মোদি সরকারের তিনটি কৃষি আইন প্রত্যাহার না-করা পর্যন্ত তারা আন্দোলন থেকে পিছু হটবেন না। এর মধ্যেই আজ বিজেপি তথা মোদি সরকারের অস্বস্তি বাড়িয়ে হরিয়ানার প্রভাবশালী খাপ পঞ্চায়েতগুলো ‘সব রকমভাবে’ কৃষকদের পাশে দাঁড়ানোর কথা ঘোষণা করেছে। খাপের সদস্যরা সোমবার দিল্লির অভিমুখে যাত্রা করবে বলে জানিয়েছেন দাদরির বিজেপি সমর্থিত নির্দল বিধায়ক সোমবীর সাঙ্গোয়ান। মোদি সরকারকে কৃষি আইন পুনর্বিবেচনার অনুরোধও জানিয়েছে তারা। খবর আনন্দবাজারের।

অমিত শাহের প্রস্তাব নিয়ে কৃষক সংগঠনগুলোর আলোচনার পরে পাঞ্জাবের ভারত কিসান ইউনিয়ন (ক্রান্তিকারী) এর সভাপতি সুরজিৎ সিংহ ফুল বলেন, ‘সরকার যেভাবে আলোচনার জন্য শর্ত রেখেছে, তাকে আমরা কৃষক সংগঠনের অপমান বলে মনে করি। আমরা কোনোভাবেই বুরারি ময়দানে যাব না। ওটা আসলে মুক্ত জেলখানা। প্রধান পাঁচটি সড়ক অবরোধ করে দিল্লি ঘেরাও করব।’

দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়াল কেন্দ্রের কাছে দাবি জানিয়েছেন, সরকার এখনই কৃষকদের সঙ্গে আলোচনায় বসুক। কংগ্রেস নেতা রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর দম্ভ এখন স্পষ্ট। দিল্লির চারদিকে যখন লক্ষ লক্ষ কৃষক বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন, তখন প্রধানমন্ত্রী কৃষি আইন নিয়ে অনড় মনোভাব দেখাচ্ছেন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ১২০০ কিলোমিটার দূরে হায়দরাবাদে গিয়ে জনসভা করতে পারেন। কিন্তু ১৫ কিলোমিটার দূরে দিল্লির সীমান্তে গিয়ে চাষিদের সঙ্গে কথা বলতে পারেন না?’ কৃষকদেরও দাবি, সরকার রাজনৈতিক স্তরে কথা না বলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে কথা বলছে।

পাঞ্জাব থেকে দিল্লিতে আসার পথে হরিয়ানার একাধিক জায়গায় কৃষকদের ঠেকাতে জলকামান, কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করা হয়েছিল। হরিয়ানার বিজেপি সরকারের মুখ্যমন্ত্রী এম এল খট্টর রবিবার দাবি করেছেন, জলকামান, কাঁদানে গ্যাস বলপ্রয়োগ নয়। পাশাপাশি, এই কৃষক বিক্ষোভে রাজনৈতিক ইন্ধন দেওয়া হচ্ছে বলে শনিবারই পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী অমরেন্দ্র সিংহের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছিলেন খট্টর। কিন্তু তার সেই অভিযোগে সিলমোহর না দিয়ে অমিত শাহ রবিবার হায়দরাবাদে ভোটপ্রচারে গিয়ে জানান, এই বিক্ষোভে রাজনৈতিক ইন্ধন নেই।

আইএনবি/বি.ভূঁইয়া