মাস্ক ছাড়া পূজামণ্ডপে প্রবেশ নয় : ডিএমপি কমিশনার

এবারের দুর্গাপূজায় পূজামণ্ডপে মাস্ক ছাড়া কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। মানতে হবে কঠোর স্বাস্থ্যবিধি। যারা এক ডোজও টিকা নেননি কিংবা যারা পঞ্চাশোর্ধ্ব তাদের অধিক সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। এ ক্ষেত্রে সত্তরোর্ধ্বদের পূজামণ্ডপে না আসার জন্য নিরুৎসাহিত করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।

সোমবার (৪ অক্টোবর) সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় অনুষ্ঠান আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে নিরাপত্তা পরিকল্পনা সভা অনুষ্ঠানে ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম এসব কথা বলেন।

সভার শুরুতেই ডিএমপি কমিশনার উপস্থিত সবাইকে শারদীয় দুর্গাপূজার শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, জাতীয় উৎসবে সুদৃঢ় নিরাপত্তা দেওয়ার দায়িত্ব রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে পুলিশ বাহিনীর। দুর্গাপূজাকে ঘিরে ডিএমপি কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। করোনা সংক্রমণ ও বিস্তার রুখতে স্বাস্থ্যবিধি ও সরকারি নির্দেশনা মেনে শারদীয় দুর্গাপূজা উদযাপন করা হবে।

তিনি বলেন, পূজামণ্ডপে মাস্ক ছাড়া কাউকে প্রবেশ করতে দেবেন না। স্বাস্থ্যবিধি মেনে দর্শনার্থীদের পূজামণ্ডপে প্রবেশের পরামর্শ দেন তিনি। দুর্গাপূজা উপলক্ষে বহু মানুষ পরিবার নিয়ে বাইরে বের হবেন। যারা টিকার একটি ডোজও নেয়নি কিংবা যারা পঞ্চাশোর্ধ তাদের অধিক সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দেন তিনি। আর যারা সত্তরোর্ধ্ব তাদেরকে পূজামণ্ডপে না আসার জন্য নিরুৎসাহিত করেন।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, শারদীয় দুর্গাপূজা উদযাপন সম্পর্কে ঢাকা মহানগর এলাকায় প্রতিমা তৈরি শুরু করে বিসর্জন পর্যন্ত কার কী দায়িত্ব তার নির্দেশনা ইতোমধ্যে ডিএমপির সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তাদের দেওয়া হয়েছে। পূজামণ্ডপের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারে প্রতিটি মণ্ডপে স্থানীয় লোকজনদের নিয়ে নিরাপত্তা কমিটি গঠনের জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগের ডিসি ও ওসিদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

দুর্গাপূজা উদযাপন উপলক্ষে ডিএমপির গৃহীত নিরাপত্তা ব্যবস্থা

>> দুর্গাপূজার প্রতিমা তৈরির সময়, পূজা চলাকালীন ও বিসর্জনের সময় মোবাইল পেট্রোলের মাধ্যমে নিরাপত্তা জোরদার করা হবে।

>> ডিএমপির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এলাকাভিত্তিক পূজামণ্ডপের নিরাপত্তা ব্যবস্থা তদারকি করবেন।

>> পূজামণ্ডপ ও আশেপাশে পকেটমার, ছিনতাই ও ইভটিজিং প্রতিরোধে পুলিশের টহল ডিউটি নিয়োজিত থাকবে।

>> দুর্গাপূজার সময় সোশ্যাল মিডিয়া মনিটরিং করা হবে।

দুর্গাপূজা আয়োজকদের যা মানতে হবে

>> পূজামণ্ডপে সিসি ক্যামেরা (রাত্রীকালীন ছবি ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন), অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র স্থাপন এবং গুরুত্বপূর্ণ পূজামণ্ডপে আর্চওয়ে গেইট স্থাপন করতে হবে।

>> পূজামণ্ডপে পৃথক প্রবেশ ও বাহির গেট মজবুতভাবে স্থাপন। যেসব মণ্ডপে সীমানা দেয়াল নেই সেসব ক্ষেত্রে বাঁশের শক্ত বেড়া নির্মাণ এবং নারী ও পুরুষের জন্য পৃথক প্রবেশ গেটের ব্যবস্থা করা।

>> প্রতিমা নির্মাণ স্থান, পূজামণ্ডপসহ সব স্থানে পর্যাপ্ত স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ। স্বেচ্ছাসেবকদের এসবি দ্বারা ভেটিং করানো ও তালিকা সংশ্লিষ্ট থানায় প্রেরণ এবং আলাদা পোশাক, পরিচয়পত্র ও আর্মড ব্যান্ড প্রদান করতে হবে।

>> পূজা উপলক্ষে মাদকের ব্যবহার, জুয়া খেলা ও আতশবাজির ব্যবহার বন্ধ রাখা।

>> আজান ও নামাজের সময় বাদ্য-বাজনা বন্ধ রাখা এবং পিএ সেট ব্যবহার না করা।

>> রাস্তায় মেলা না বসানো এবং পূজামণ্ডপ সংলগ্ন স্থান পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা।

>> রাত ৮টার মধ্যে প্রতিমা বিসর্জন সম্পন্নের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

সমন্বয় সভায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা, ফায়ার সার্ভিস, র‌্যাব, আনসারের প্রতিনিধি, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ, ঢাকা মহানগর সার্বজনীন পূজা উদযাপন কমিটি ও বাংলাদেশ রামকৃষ্ণ মিশনের প্রতিনিধি এবং হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের প্রতিনিধিসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, মহাষষ্ঠীর মাধ্যমে আগামী ১১ অক্টোবর শারদীয় দুর্গাপূজা শুরু হয়ে ১৫ অক্টোবর শুক্রবার বিজয়া দশমী ও বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে।