মাইকিং করে মাজারে হামলা, কবর খুঁড়ে দেহাবশেষ নিয়ে গেছে

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি: সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার শ্যামপুর গ্রামে মাজারে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এসময় ৩টি কবর খুঁড়ে দেহাবশেষ নিয়ে গেছে দুর্বত্তরা।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) প্রায় দিনভর ওই গ্রামের ‘হযরত বড়পীর গাউসুল আজম দরবার শরীফে’ এ হামলার ঘটে।

মাজারের ৩টি কবর খুড়ে তার ভিতরে থাকা মানুষের হাঁড়, মাথার খুলি নিয়ে যায় এবং ২টি খানকা ঘর ও একটি রান্না ঘর ভাঙচুর করা হয়েছে। এছাড়া ওই মাজারে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট করা হয়েছে।

মাজার কমিটির সভাপতি আব্দুল ওয়াহাব কালু, সাধারণ সম্পাদক হযরত আলী ও খাদেম হাফিজুল ইসলাম বলেন, ‘উক্ত গ্রামের খাজা সফুরা পাগলী ৫ শতক মিলে মোট ২০ শতক জায়গায় ২০০৫ সালে হযরত বড়পীর আব্দুল কাদের জিলানী (রা.) দরবার শরীফের নামে ওয়াকফ্ করে দিয়েছেন। এরপর থেকে এখানে দরবার শরীফের কার্যক্রম চলতে থাকে। সোমবার সকালে মাজার বিরোধীরা মাইকে মাজার ভাঙচুরের ঘোষণা দেয়। এরপর তারা মিছিল সহকারে মাজারে এসে বিকেল ৪টা পর্যন্ত তাণ্ডব চালায়। এসময় দেশীয় অস্ত্র দিয়ে মাজারের বিভিন্ন স্থাপনা ভাঙচুর করে তারা। ৩টি পাকা কবর ভেঙ্গে কবরের ভিতরে থাকা দেহাবশেষ নিয়ে যায়।’

তারা জানান, দীর্ঘ ১৭ বছর এখানে মাজারের কার্যক্রম চললেও কেউ কোনদিন বাধা দেয়নি। সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে বিষয়টি জানানো হয়েছে।

হামলাকারীদের বিচার চেয়ে মাজারের ভূমিদাতা শাহ সুফি ফকির শহিদ শাহের বৃদ্ধা মা ওমিছা বেগম বলেন, ‘মানুষের সঙ্গে মানুষের শত্রুতা থাকতে পারে। কিন্তু মৃতদেহের সঙ্গে কোনো শত্রুতা থাকার কথা না। অথচ হামলাকারীরা মাজারে হামলা চালিয়ে আমার ছেলের কবর খুঁড়ে তার দেহাবশেষ নিয়ে গেছে। আমি এর বিচার চাই।’

জানা যায়, প্রতি সপ্তাহে বৃহস্পতিবার এবং প্রতি মাসের পূর্ণিমার রাতে দরবার শরীফে জিকির, মিলাদ মাহফিল ও মুর্শিদী গানের আয়োজন শেষে তবারক বিতরণ করা হয়ে থাকে। প্রতি বছর ৮ সেপ্টেম্বর এখানে বাৎসরিক অনুষ্ঠান হয়। বড় বড় শিল্পীরা এখানে গান-বাজনা করতে আসেন। এখানে বহু ভক্তের আগমন ঘটে এবং এতে কেউ বিরোধিতা করেননি।

এ বিষয়ে সদর থানার ওসি হুমায়ুন কবির বলেন, মাজার ভাঙচুরের কথা জেনেছি। ওই মাজারের খাদেমকে লিখিত অভিযোগ দিতে বলা হয়ছে এবং অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উল্লেখ্য, এর আগে ২৯ আগস্ট কাজিপুর উপজেলার প্রত্যন্ত চরাঞ্চল মনসুরনগর ইউনিয়নের বামনজানি বাজারের পাশে অবস্থিত আলী পাগলার মাজার এবং ৩ সেপ্টেম্বর সদর উপজেলার কালিয়া হরিপুর গ্রামের ইসমাইল পাগলার মাজার ভাঙচুর করা হয়।

আইএনবি / বিভূঁইয়া