কানাডায় ভয়াবহ দাবানল, শহর ছাড়ার অপেক্ষায় হাজারো মানুষ

অনলাইন ডেস্ক

কানাডার উত্তরাঞ্চলীয় শহরের দিকে দ্রুত এগিয়ে আসছে দাবানল। নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে শহর ছাড়তে মরিয়া হয়ে আছে হাজারো মানুষ। কিন্তু বৃহস্পতিবার দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করার পরেও অনেক মানুষ উদ্ধারকারী বিমানে উঠতে পারেননি। তাদেরকে শুক্রবার বা শনিবার চেষ্টা করতে বলেছেন কর্মকর্তারা।

এদিকে, এমন পরিস্থিতিতে দেশটির বড় দুটি এয়ারলাইন্স তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছে ভাড়া ও টিকিট পরিবর্তন ফি বাড়িয়ে দেয়ার কারণে। খবর- বিবিসি

পুরো উত্তর-পশ্চিম ভূখণ্ডে অন্তত ২৪০টি দাবানল তৈরি হয়েছে। বৃহস্পতিবার এর একটির অবস্থান ছিল ইয়েলোনাইফের ১৫ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে। শনিবার নাগাদ এই আগুন শহরের কাছাকাছি চলে আসতে পারে। এ কারণে গত মঙ্গলবার সেখানে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়।

ঘনবসতিপূর্ণ ইয়েলোনাইফে প্রায় ২০ হাজার মানুষ বসবাস করে। এদের সবাইকে শুক্রবার সকালের মধ্যে শহর ছাড়তে বলা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার উদ্ধারকারী বিমানে ওঠার জন্য নাম রেজিস্ট্রেশন করতে দীর্ঘ লাইন দেখা গেছে। স্থানীয় একটি স্কুলের বাইরে এ কার্যক্রম চলছিল। হালকা বৃষ্টির মধ্যেই পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা লোকজনকে সহায়তা করেছেন।

দেশটির কমিউনিকেশন বিভাগের ডিরেক্টর অ্যামি কেনেডি জানান, স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার দুপুরের মধ্যে চারশর বেশি মানুষ শহর ছাড়ার সুযোগ পাচ্ছে না। হাঁটতে অক্ষম ও প্রতিবন্ধীদের অপেক্ষমাণ লাইন থেকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এক ব্রিফিংয়ে স্থানীয় কর্মকর্তারা জানান, শুক্রবার ২২টি ফ্লাইটে করে লোকজনকে সরিয়ে নেওয়া হবে। তাতে ১৮শ মানুষ সুযোগ পাবে। অন্তত পাঁচ হাজার মানুষকে বিমানে করে ইয়েলোনাইফ থেকে সরিয়ে নেয়ার দরকার হবে।

ভাড়া বাড়ানোর অভিযোগে স্থানীয় বাসিন্দারা এয়ার কানাডা ও ওয়েস্টজেট বিমান সংস্থার সমালোচনা করছেন। তবে এয়ার কানাডার মুখপাত্র সিবিসি নিউজকে বলেছেন, সরাসরি পরিচালিত ফ্লাইটগুলোর ভাড়া নির্ধারিত আছে এবং শহরটিতে এই বিমান সংস্থাটি তাদের কার্যক্রম দ্বিগুণ করেছে। কিন্তু ‘আগুনের কারণে বিমান উড্ডয়নের কিছু সীমাবদ্ধতা আছে’ এবং সে কারণে শনিবারের কিছু ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে।

ওয়েস্টজেট বলছে, ভাড়া বাড়ানো ঠেকাতে তারা দাম সমন্বয় করছেন। একই সঙ্গে আগামী পাঁচদিন যারা ইয়েলোনাইফ শহর থেকে যাত্রা করবে তাদের রিশিডিউল ফি বাতিল করছে। অন্য বিমান সংস্থাগুলোকেও শহর ছাড়তে আগ্রহী লোকজনকে সহায়তা করতে বলা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো বলেছেন, শহরের মেয়রের সঙ্গে পরিস্থিতি নিয়ে তিনি যোগাযোগ রাখছেন। এখনও সামনের দিনগুলোতে যথাযথ সহযোগিতা দেওয়ার বিষয়ে সরকারের অঙ্গীকারের বিষয়টি আমি পুনর্ব্যক্ত করছি।

প্রায় ৪৬ হাজার মানুষ উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে বসবাস করে। ওই অঞ্চলের ইতিহাসে বিমান নির্ভর উদ্ধারের ঘটনা এটি সবচেয়ে বড়।

কানাডা এবার সবচেয়ে মারাত্মক দাবানল মৌসুম পার করছে। দেশজুড়ে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বিভিন্ন জায়গায় প্রায় ১১শ দাবানল সক্রিয় আছে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে গরম ও শুষ্ক আবহাওয়ার ঝুঁকি বেড়েছে যা দাবানল বাড়িয়ে তুলছে।