স্ট্রোক-ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায় কচুশাক

স্বাস্থ্য ডেস্ক: আয়রনসমৃদ্ধ খাবার কচুশাক। বাংলাদেশেও বেশ সহজপ্রাপ্য। ইলিশ, চিংড়ি ও শুঁটকি মাছের সঙ্গে মুখরোচক খাবার হিসেবে বেশ সুস্বাদু। পুষ্টিগুণও নেহাত কম নয়। কচুশাকের প্রধান উপাদান আয়রন রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা ঠিক রেখে শরীরে অক্সিজেন সরবরাহ বজায় রাখে।

কচুশাককে অনেকেই গুরুত্ব দিতে চান না। অথচ কচুশাকের রয়েছে অনেক পুষ্টিগুণ। কচুশাকই দৈনন্দিন পুষ্টি চাহিদার অনেকখানি পূরণ করতে পারে।

কচুশাকের পুষ্টিগুণ

কচুশাকে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন ও খনিজ উপাদানসমূহ। প্রতি ১০০ গ্রাম কচুশাকে ৩৯ গ্রাম প্রোটিন, ৬.৮ গ্রাম শর্করা, ১৫ গ্রাম চর্বি, ২২৭ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম, ১০ মিলিগ্রাম আয়রন, ৫৬ কিলোক্যালরি খাদ্যশক্তি এবং ভিটামিন ‘এ’, ‘বি’ ৬ ও ‘সি’ আছে। কচুর ডগা, বিশেষ করে কালো কচুশাকে প্রচুর পরিমাণে আয়রন থাকে।

কচুশাকের উপকারিতা—

হিমোগ্লোবিনের সরবরাহ বাড়ায়

কচুশাক আয়রনসমৃদ্ধ বলে এর সমাদর অনেক বেশি। আমাদের শরীরে রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কমে গেলে চিকিৎসকরা কচুশাক খাওয়ার পরামর্শ দেন। কচুশাকে প্রচুর পরিমাণে আয়রন থাকে। তাই রক্তশূন্যতায় ভোগা রোগীদের জন্য কচুশাক খাওয়া এক রকম আবশ্যক বললেই চলে।

রাতাকানা রোগ

কচুশাক ভিটামিন এ-এর খুব ভালো উৎস। রাতাকানা রোগসহ ভিটামিন এ-এর অভাবে হওয়া সব ধরনের রোগপ্রতিরোধে কচুশাক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। কচুশাকে ভিটামিন-এ থাকে, যা আমাদের রাতকানা, ছানি পড়াসহ চোখের বিভিন্ন রোগপ্রতিরোধসহ দৃষ্টিশক্তি বাড়িয়ে দেয়।

হৃদরোগ-ক্যান্সারে ঝুঁকি কমায়

কচুশাকে রয়েছে উচ্চমাত্রায় পটাশিয়াম। তাই হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকিও কমায়। কচুশাক খেলে রক্তের কোলেস্টরেল কমে তাই উচ্চরক্তচাপের রোগীদের জন্য কচুশাক এবং কচু বেশ উপকারী। নিয়মিত কচুশাক খেলে কোলন ক্যান্সার ও ব্রেস্ট ক্যান্সারের ঝুঁকিও কমে।

কোষ্ঠকাঠিন্য

কচুশাকে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার বা আঁশ থাকে, যা খাবারকে সহজে হজম করতে সাহায্য করে থাকে। যাদের কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা আছে, তারা কচুশাক খেতে পারেন।

শরীরের ক্ষত

কচুশাকে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ‘সি’ থাকায় এর লৌহ উপাদান আপনার দেহে সহজে আত্মীকরণ হয়ে যায়। তাছাড়া ভিটামিন-সি শরীরের ক্ষত সারাতে সাহায্য করে। তাই শিশুদের ছোটবেলা থেকেই কচুশাক খাওয়ানো উচিত।

অক্সিজেন সরবরাহ

শরীরে অক্সিজেন সরবরাহ সচল রাখতে কচুশাক অনেক বেশি কার্যকর ভূমিকা পালন করে থাকে। কচুশাকের আয়রন ও ফোলেট রক্তের পরিমাণ বাড়ায়। ফলে অক্সিজেন সরবরাহ পর্যাপ্ত থাকে। এতে রয়েছে ভিটামিন ‘কে’, যা রক্তপাতের সমস্যা প্রতিরোধ করে।

দাঁত ও হাড়ের গঠন

কচুশাকের সবচেয়ে বড় উপকারিতা হল এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ম্যাংগানিজ ও ফসফরাস। আমাদের দাঁত ও হাড়ের গঠন ও ক্ষয়রোগ প্রতিরোধে কচুশাকের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

গর্ভবতী নারী

কচুশাকে বিদ্যমান নানা রকমের ভিটামিন এবং খনিজ উপাদান গর্ভবতী মা ও শিশুর জন্য অনেক উপকারী। কচুশাক সহজলভ্য, তাই দরিদ্র পরিবারের গর্ভবতী নারীরা ভিটামিন ও আয়রনের চাহিদা পূরণের জন্য কচু বা কচুশাক খেতে পারেন।

মুখ ও ত্বকের রোগ

ভিটামিন ‘এ’-এর পাশাপাশি কচুশাকে রয়েছে ভিটামিন ‘বি’ ও ‘সি’। তাই মুখ ও ত্বকের রোগপ্রতিরোধেও কচুশাক সমান ভূমিকা রাখে।

 

আইএনবি/বিভূঁইয়া