সাপের কামড়ে প্রতিবছর সাড়ে ৭ হাজার মানুষের মৃত্যু

দেশে প্রতিবছর ৪ লাখ ৩ হাজার ৩১৭ জন মানুষ সাপের কামড়ে আক্রান্ত হয় এবং এতে ৭ হাজার ৫১১ জন মানুষ মারা যায়। দেশব্যাপী পরিচালিত অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি (এনসিডিসি) সর্পদংশন জরিপে এ তথ্য উঠে এসেছে।

রোববার রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে চতুর্থ স্বাস্থ্য, জনসংখ্যা ও পুষ্টি সেক্টর কর্মসূচির প্রাপ্ত ফল প্রকাশ অনুষ্ঠানে এই তথ্য জানানো হয়।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের মেডিসিন বিভাগ এবং সেন্টার ফর ইনজুরি প্রিভেনশন অ্যান্ড রিসার্চ, বাংলাদেশের যৌথ নেতৃত্বে অনেক প্রতিষ্ঠান এবং সংস্থার অংশগ্রহণে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর সহায়তায় দেশব্যাপী দৈবচয়নের ভিত্তিতে নির্ধারিত ২০০টি পিএসইউ-এর ৬২ হাজার খানাতে বাড়ি-বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করা হয়। এর সাথে চট্টগ্রাম এবং রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পূর্বে চিকিৎসা গ্রহণ করা ৪০০ জন সর্পদংশন রোগীর বর্তমান শারীরিক ও মানসিক অক্ষমতা যাচাই করা হয়।

জরিপে বলা হয়, দেশে প্রতিবছর প্রতি লাখে ২৪৪ জন সাপের কামড়ে আক্রান্ত এবং প্রায় ৫ জন মানুষ মারা যায়। মোট আক্রান্তের ৯৫ ভাগই হলো গ্রামে। আর এসব সাপের কামড়ের ৪ ভাগের এক ভাগ বিষাক্ত সাপের কামড় হয়ে থাকে। যার মাঝে ১০ দশমিক ৬ শতাংশ শারীরিক এবং ১ দশমিক ৯ শতাংশ পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে থাকে।

সর্পদংশন বেশি ঘটে খুলনা ও বরিশাল বিভাগে। ২৫ থেকে ৫৫ বছর বয়সী পুরুষেরা বাড়ির আশপাশে সন্ধ্যা থেকে মধ্যরাতের ভিতরে সবচেয়ে বেশি সাপের কামড়ের শিকার হন।

জরিপে দেখা যায়, দেশের প্রায় ৮০ ভাগ মানুষ দংশনের পর দংশিত অঙ্গে গিঁট দেন এবং ৬৫ ভাগ মানুষ প্রথমেই ‘ওঝা’ বা প্রচলিত চিকিৎসকের নিকট চিকিৎসা নেন। সর্পদংশনের পর প্রতি হাজারে ২ জন মানুষের অঙ্গহানি ঘটে এবং ২ থেকে ২৩ ভাগ মানুষ বিভিন্ন দীর্ঘমেয়াদি শারীরিক অসুস্থতায় ভোগ করেন। সর্পদংশনের পর শতকরা ১০ ভাগ মানুষ দীর্ঘমেয়াদি অবসাদগ্রস্ততায় আক্রান্ত হন।

প্রতিটি সর্পদংশনের কারণে চিকিৎসার জন্য দংশিত ব্যক্তির প্রায় ২০০০ টাকা ব্যয় হয়।

এই জরিপে আরও জানা গেছে, মানুষ ছাড়া প্রাণীরাও সাপের কামড়ে আক্রান্ত হচ্ছে আশঙ্কাজনক হারে। প্রতি বছর প্রায় ১৯ হাজার গৃহপালিত পশু সর্পদংশনে আক্রান্ত হয় এবং এর মধ্যে আড়াই হাজার গৃহপালিত পশু মারা যায়। ফলে প্রতি বছর বিপুল পরিমাণ আর্থিক ক্ষতি হয় ।