রাখাইনে গণধর্ষণে তিন সেনার ২০ বছরের জেল

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে গণধর্ষণের মামলায় এক রাখাইন নারী জিতে গেছেন। প্রায় এক মাস আইনি লড়াইয়ের পর এই জয় পেলেন তিনি।

শনিবার তিন ধর্ষককে ২০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন দেশটির আদালত। মিয়ানমারে সেনাবাহিনীর প্রভাব বেশি থাকায় এই জয়কে বিরল হিসেবে আখ্যা দেওয়া হচ্ছে। এ জয়ের পর ওই নারী জানান, এই শাস্তি অন্য যেসব ধর্ষিতা আছেন বা নির্যাতিতা আছেন তাদের সাহস যোগাবে।

ধর্ষিত হওয়ার পর সেনাদের বিরুদ্ধে মামলা করেন ওই নারী। তিনি বলেন, আমার মতো অনেক নারীই এই ঘটনার শিকার হয়েছেন। তবে তারা নিজেদের পরিচয় গোপন রেখেছেন। কিন্তু তাদের মতো আমি যদি এটা গোপন করে যেতাম তাহলে রাখাইনে আরো মানুষ একই ঘটনার শিকার হতেন।

এর আগে সেনাবাহিনী রাখাইনে কোনো ধর্ষণের সঙ্গে জড়িত নয় বলে আন্তর্জাতিক সংগঠনের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে। কিন্তু এই নারী প্রমাণ করে দিয়েছেন, রাখাইনে ধর্ষণ করা হচ্ছে। আর তাতে সেনাবাহিনী জড়িত। তবে এ অভিযোগের সাহস দেখানোর ফলে সমাজে তাকে কলঙ্কিত হিসেবে দেখা হচ্ছে। এমনকি তার স্বামী পর্যন্ত তার সঙ্গে কথা বলেন না।

তিনি বলেন, একই সঙ্গে আমি খুশি এবং দুঃখিত। এখনো বিশ্বাস হচ্ছে না যে, সামরিক বিচারে তার পক্ষে রায় দেওয়া হবে। আমি বিচার পাওয়ার পরও বিশ্বাস করতে পারছি না যে, এই রায়ের ফলে ধর্ষণ বন্ধ হবে। সংঘাতকবলিত এলাকাগুলোতে নারীর বিরুদ্ধে নির্যাতন বন্ধ হবে। কারণ, মিয়ানমারের সেনাবাহিনী বিশ্বস্ত নয়।

হিউম্যান রাইট ওয়াচের ফিল রবার্টসন বলেছেন, সেনাবাহিনীর র‌্যাংকধারীদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ মোকাবিলার জন্য মিয়ানমারেরে সেনাবাহিনী প্রস্তুত কি না, তা এখনো পরিষ্কার নয়। এর আগে সেনাবাহিনী তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছিল। এমনকি কোনো কোনো ক্ষেত্রে তারা ভিকটিমের বিরুদ্ধে মানহানি মামলা করেছে।

৩৬ বছর বয়সি চার সন্তানের মা ওই নারীকে গত জুনে রাখাইনের উত্তরাঞ্চলে গণধর্ষণ করে সেনাবাহিনীর সদস্যরা। এই অঞ্চলেই সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে গণধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ, গুলি করে হত্যা, রোহিঙ্গাদের ধনসম্পদ ধ্বংস করাসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে। অনেক মানবাধিকার বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংগঠন এ ঘটনাগুলোর প্রামাণ সকলের সামনে এনেছে। জাতিসংঘ একে জাতি নিধন হিসেবে আখ্যায়িত করেছে।

সূত্র: আলজাজিরা।

আইএনবি/বি.ভূঁইয়া