বর্তমান সিইসি নিরপেক্ষ নয়, তাকে সরে যেতে হবে-চরমোনাই পীর

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের পদত্যাগে যা কিছু করতে হয় জনগণ তাই করবে বলে জানিয়েছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই।

বুধবার (২১ জুন) সকাল ১০টায় রাজধানীর বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটের সামনে গণমিছিল শুরুর আগে দেওয়া বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

রেজাউল করিম বলেন, আমাদের মেয়র প্রার্থীকে নিয়ে সিইসি যে মন্তব্য করেছেন তা কেউ বলেনি, কোনো সুস্থ মানুষ এমন মন্তব্য করতে পারে না। ফলে কোনো অসুস্থ মানুষ নির্বাচন কমিশনের মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থানে থাকতে পারে না। এরপরও যদি তাকে রাখা হয় তাহলে তার পদত্যাগের জন্য যা কিছু করতে হয় জনগণ তাই করবে।

তিনি বলেন, এ সরকারের অধীনে কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না। তাই সরকারকে বলবো পদত্যাগ করে একটি জাতীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে।

রেজাউল করিম বলেন, ১৯৭০-এর নির্বাচনে শেখ মুজিবুর রহমান যখন নির্বাচিত হলেন, তখন আইয়ুব খান নির্বাচনী ফলাফল মানেননি। শেখ মুজিবের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করেননি। শেখ মুজিবকে ক্ষমতায় বসাতে জনগণ কিন্তু আন্দোলন সংগ্রাম করেছিলেন, স্বাধীনতা যুদ্ধ করেছিলেন, জীবন দিয়েছিলেন। সেই আওয়ামী লীগ সেই নীতি-আদর্শে আর নেই। আওয়ামী লীগকে নতুন করে সরকার গঠন ও দেশ পরিচালনা আর করতে দেওয়া হবে না। এটা হতে দেওয়া যাবে না।

তিনি আরও বলেন, সরকার পরিবর্তনে আমরা নির্বাচনকালীন জাতীয় সরকার দাবি করেছি। অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোও নির্দলীয় সরকারের দাবি করছে। দলীয় সরকারের অধীনে যে সুষ্ঠু নির্বাচন হয় না, সেটা এখন সবাই বলছেন যা প্রমাণিতও।

আজ দেশের অবস্থা ভয়াবহ দাবি করে মুফতী বলেন, দেশের মানুষ কিন্তু অশান্তির আগুনে সর্বত্র দাউদাউ করে জ্বলছেন। জনগণ তো কারেন্টের বিল বকেয়া রাখেননি। তাহলে সেই টাকা কোথায় গেল? আমরা দেখি সরকার ও তার সন্ত্রাসীরা জনগণের ঘাম ঝরানো টাকা বিদেশে পাচার করছেন।

বিক্ষোভ সমাবেশে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের অন্যতম প্রেসিডিয়াম সদস্য মাওলানা মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানি বলেন, সিটি নির্বাচনের নামে নাটক মঞ্চস্থ চলছে। এ নাটক আর চলতে পারে না। সিইসি তো অসুস্থ সেটা তো বাদই। বাস্তবতা বিবর্জিত কথাবার্তা বলছেন হাসিনা ও তার মন্ত্রীরাও। বাস্তবতা বিবর্জিত এ সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করা হবে।

মেশিনে দেশ চালাতে চায় সরকার। সেটি হবে না। হাসিনা তোমার অধীনে জনগণ নির্বাচন চায় না। জাতীয় সরকার নির্বাচনের দাবি এখন সবার। জাতীয় ছাড়া কোনো নির্বাচন হবে না।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুস আহমদ বলেন, মিথ্যে বলা, মিথ্যে ওয়াদা ও তা ভঙ্গ করা অপরাধ, যেটি সরকার করছে। এবারের সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের মাধ্যমে ইসির যোগ্যতা যাচাই করা হলো। আগে ভোট ডাকাতি রাতে করেছে আওয়ামী লীগ, এখন দিনেই করছে। মানুষ চুরি করে অভাবে। সরকার ভোট চুরি করছে অভাবে, কারণ তাদের ভোটের অভাব।

ইসলামী যুব আন্দোলনের সেক্রেটারি মাওলানা মনসুর আহমেদ আওয়ামী লীগ সরকারকে অবৈধ সরকার দাবি করে বলেন, স্থানীয় নির্বাচনে ইসি ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন। এ ব্যর্থ কমিশনকে আমরা আর দেখতে চাই না।

ইসলামি আইনজীবী পরিষদের জয়েন সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট খালিদ মিয়া বলেন, পাকিস্তান সরকারও উন্নয়নের কথা বলেছিল। কিন্তু নির্বাচিত দলকে ক্ষমতা দেয়নি। বর্তমান সরকারও ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করতে উন্নয়নের বুলি আওড়াচ্ছে। বিএনপি সরকারও তাই করেছে। এরশাদ, বিএনপির পতনেও সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবি পূরণ হয়নি। আমরা সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিতে শেখ হাসিনা পদত্যাগ না করা পর্যন্ত ঘরে ফিরব না।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় প্রশিক্ষণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম বলেন, বর্তমান সরকার নির্বাচন ব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছে। ব্যর্থ কমিশনে অথর্বদের নিয়োগ করা হয়েছে। ১২ জুন বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে সেন্টার দখল করা হয়েছে, নায়েবে আমীর মুফতি ফয়জুল করীমের ওপর হামলা করা হয়েছে। এরপর সিইসি যা বলেছেন তা বিশ্বজুড়ে নিন্দিত বক্তব্যে পরিণত হয়েছে। আজ হোক বা কাল হোক হামলাকারীদের বিচার হবেই। সোজা আঙ্গুলে ঘি না উঠলে বাঁকা করা হবে। তবুও এ ব্যর্থ কমিশনকে পদত্যাগে বাধ্য করা হবে।

ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সভাপতি শরিফুল ইসলাম রিয়াজ বলেন, ১৯৭১ সালে মানুষ সুখী সমৃদ্ধ দেশ গড়ার লক্ষ্যে রক্ত দিয়েছেন, শহীদ হয়েছেন। অথচ আমরা আজ কি দেখছি, দেশ-জনগণের স্বার্থকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে রাষ্ট্রীয় সব প্রতিষ্ঠানকে দলীয়করণ করে কোমর ভেঙ্গে দেওয়া হচ্ছে। নির্বাচন কমিশনে সরকার সিইসি হিসেবে এমন একজন ব্যক্তিকে বসানো হয়েছে যিনি সরকারের তল্পিবাহকে পরিণত হয়েছে। কোনো মেরুদণ্ডহীন ব্যক্তিকে নির্বাচন কমিশনে দেখতে চাই না।

তিনি বলেন, ছাত্রলীগ আজ সন্ত্রাসী সংগঠনে পরিণত হয়েছে। যেখানেই সন্ত্রাস, ধর্ষণ সেখানেই ছাত্রলীগ। ক্যাম্পাসগুলোতে ভয়ের রাজত্ব কায়েম করা হয়েছে। পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে রক্তের বদলা না নেওয়া পর্যন্ত রাজপথ ছাড়ার সুযোগ নেই।

ইসলামী যুব আন্দোলনের সেক্রেটারি মাওলানা মনসুর আহমেদ আওয়ামী লীগ সরকারকে অবৈধ সরকার দাবি করে বলেন, স্থানীয় নির্বাচনে ইসি ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন। এ ব্যর্থ কমিশনকে আমরা আর দেখতে চাই না।

ইসলামি আইনজীবী পরিষদের জয়েন সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট খালিদ মিয়া বলেন, পাকিস্তান সরকারও উন্নয়নের কথা বলেছিল। কিন্তু নির্বাচিত দলকে ক্ষমতা দেয়নি। বর্তমান সরকারও ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করতে উন্নয়নের বুলি আওড়াচ্ছে। বিএনপি সরকারও তাই করেছে। এরশাদ, বিএনপির পতনেও সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবি পূরণ হয়নি। আমরা সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিতে শেখ হাসিনা পদত্যাগ না করা পর্যন্ত ঘরে ফিরব না।

 

এনএ/জেএস