বন্যা নিয়ে জাতিসংঘের পূর্বাভাস প্রয়োজন নেই : তথ্যমন্ত্রী

আইএনবি নিউজ: জাতিসংঘের পূর্বাভাস যারা বন্যার সঙ্গে পরিচিত নয় তাদের জন্য সহায়ক হবে। কিন্তু বাংলাদেশের জন্য জাতিসংঘের পূর্বাভাসের প্রয়োজন নেই বলে জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

তিনি বলেন, এদেশের মানুষের বন্যার সাথে বসবাস করতে জানেন। বন্যাকে কিভাবে মোকাবেলা করতে হয় বাংলাদেশের মানুষ সেটি জানে।

বৃহস্পতিবার (২৩ জুলাই) তথ্য মন্ত্রণালয় সভাকক্ষে ভিডিওকনফারেন্সে ভারতীয় হাইকমিশনের সহায়তায় চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে আলিপুর রহমানীয়া স্কুল এন্ড কলেজের বিজ্ঞান ভবন নির্মাণ উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

জাতিসংঘ আশঙ্কা করছে এবছর সারা বিশ্বে বন্যা দীর্ঘায়িত হবে সে বিষয়ে আমাদের প্রস্তুতি কেমন জানতে চাইলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা বন্যা নিয়ে বসবাস করি। বন্যাকে কিভাবে মোকাবেলা করতে হয় বাংলাদেশের মানুষ সেটি জানে।

বন্যা আমাদের নিত্য সঙ্গী। জাতিসংঘের পূর্বাভাস যারা বন্যার সঙ্গে পরিচিত নয় তাদের জন্য সহায়ক। কিন্তু বাংলাদেশের জন্য জাতিসংঘের পূর্বাভাসের প্রয়োজন নেই। আমরা বন্যার সাথে বসবাস করি কিভাবে মোকাবেলা করতে হয় সেটাও আমরা জানি এবং আমাদের কাছ থেকে অনেকে শিখতে পারে।

মির্জা ফখরুলের এক মন্তব্যের বিষয় জানতে চাইলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব প্রতিনিয়তই একই ধরনের কথা বলেন। একই বাঁশি বহুদিন ধরে বাজাচ্ছেন।

আর একই ঢোলের আওয়াজ আমরা তার মুখ থেকে দীর্ঘদিন ধরে শুনে আসছি। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে কোরনায় মৃত্যুর হার পৃথিবীর যে কয়টি দেশে কম তাদের মধ্যে একটি হচ্ছে বাংলাদেশ। এমনকি ভারত পাকিস্তানের থেকেও বাংলাদেশে করোনা আক্রান্তদের মধ্যে মৃত্যুর হার কম। এটা সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বের কারণে।

তিনি বলেন, ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেবরা যখন ক্ষমতায় ছিল তখন তারা সঠিকভাবে কোন দুর্যোগ মোকাবেলা করতে পারেনি। সে ব্যর্থতা আমরা বারং বার দেখেছি।

১৯৯১ সালে ঘুর্ণিঝড়ে তাদের ব্যর্থতা দেখেছি। তাদের সিদ্ধান্তহীনতা ও ঘুর্ণীঝড় হয়ে যাওয়ার পর সঠিক কার্যক্রমের অভাবের কারনে লক্ষ লক্ষ মানুষ মৃত্যু বরণ করেছিল।

হাজার হাজার কোটি টাকার সস্পদের হানি হয়েছিল। ২০০৪ সালে বন্যায় দেশের মানুষ অনাহারে মৃত্যুবরণ করেছে।তারা যখনই ক্ষমতায় ছিল তারা কখনোই দুর্যোগ সঠিকভাবে মোকাবেলা করতে পারেনি।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন দেশ পরিচালনার দায়িত্ব পেয়েছে তখন তার বলিষ্ঠ সাহসী নেতৃত্বের কারণে যেকোন দুর্যোগ সঠিকভাবে মোকাবেলা করে দেখিয়েছেন।

সেই সক্ষমতার জন্য আন্তর্জাতিকভাবে পুরস্কৃত হয়েছেন। ১৯৯৮ সালে দেশে ভয়াবহ বন্যায় ৭৫ ভাগ পানির নিচে তিনমাস ছিল। তখন মানুষ অনাহারে মৃত্যু বরণ করেনি।

এছাড়া সিডর, আইলাসহ অনেক দুর্যোগের কথা আমরা সবাই জানি। গত ১১ বছরে বন্যাও হয়েছে সম্প্রতি ঘুর্ণিঝড় হয়েছে৷ সেটা প্রধানমন্ত্রী সঠিক পদক্ষেপ নিয়ে দেশের মানুষকে নিরাপদে রেখেছেন।

এরআগে ভিডিওকনফারেন্সে ভারতীয় হাইকমিশনের সহায়তায় চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে আলিপুর রহমানীয়া স্কুল এন্ড কলেজের বিজ্ঞান ভবন নির্মাণ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ভারত সরকারকে আমি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই যে এধরনের একটি প্রকল্প হাতে নিয়ে হাটহাজারীতে আলিপুর রহমানীয়া স্কুল এন্ড কলেজের বিজ্ঞান ভবন নির্মাণ করার জন্য। উভয় দেশের সম্পর্ক অকৃত্রিম ও ঐতিহাসিক। ভারত সরকার বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে অহ্যাহতভাবে সহায়তা করে গেছেন।

তিনি বলেন, বর্তমানে দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছে। একটি স্কুলের ভবন নির্মাণ করে দেয়া ও বিভিন্ন স্থানে এধরনের ভবন নির্মাণ করে দেয়া একটি মাইলস্টোন কাজ হয়েছে ভারত সরকারের পক্ষ থেকে। আমাদের দারিদ্র বিমোচন করার ক্ষেত্রে উভয় দেশ অনেকদুর এগিয়ে গেছে। দুই দেশের এই সম্পর্ক রাজনৈতিক বেড়া জালের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না।

ধীরে ধীরে আমাদের সম্পর্ক উন্নয়ন করছি এটা কাঙ্খিত। আশা করছি আমাদের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ভারত সহায়ক ভুমিকা পালন করবে। দারিদ্র বিমোচন থেকে শুরু করে মানুষের কাঙ্খিত উন্নয়নে ও স্বপ্নপূরণে সহায়ক হবে। কারণে পাশের দেশের উন্নয়ন বাদ দিয়ে যে উন্নয়ন সেটা টেকসই হয় না। ভারত ও বাংলকদেশের নেতৃবৃন্দ সেটা উপলব্ধি করতে পেরেছেন।

এসময় অনলাইনে যুক্তছিলেন সভাপ্রধান হিসেবে ভারতের হাইকমিশনার রিভা গাঙ্গুলি দাস,বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম ৫ আসনের সংসদ সদস্য আনিসুল ইসলাম মাহমুদসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা৷
কালের কন্ঠ

আইএনবি/বি.ভূঁইয়া