গাজীপুরে ফিরছেন পোশাককর্মীরা

গাজীপুর প্রতিনিধি: গণপরিবহন বন্ধ থাকায় গাজীপুরে ফিরেছেন পোশাককর্মীরা ট্রাক-পিকআপে বা রিকশাভ্যানে করে । এতে পথে পথে দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে তাদের।

গাজীপুর মহানগরীর নাওজোড় এলাকার দিগন্ত সোয়েটারে কাজ করেন নেত্রকোনার মদন উপজেলার রাশেদ, জোহরা বেগম ও মর্জিনা আক্তার। শনিবার দুপুরে সদন উপজেলার বাঘেরবারে কথা হলে তারা জানায়, ৪ এপ্রিল পর্যন্ত কারখানা ছুটি ছিল। ছুটিতে গ্রামে চলে গিয়েছিলেন। বাস না চলায় জনপ্রতি তিন শ ভাড়া দিয়ে গাদাগাদি করে ট্রাকে ময়মনসিংহের ভালুকা আসেন। ওখান থেকে গাজীপুরের চান্দনা চৌরাস্তা যেতে জনপ্রতি দেড় শ টাকা ভাড়া চুক্তিতে ১৩-১৪ জন শ্রমিক একটি পিকআপে ওঠেন। কিন্তু বাঘের বাজার আসার পর পুলিশ পিকআপটিকে সামনে যেতে দেয়নি। পিকআপচালক নামিয়ে দেওয়ায় কিছুটা পথ হেঁটে, কিছুটা পথ রিকশাভ্যানে অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে চান্দনা চৌরাস্তায় পৌঁছেছেন।

গাজীপুরের শ্রমিক-অধ্যুষিত চান্দনা চৌরাস্তা, ভোগড়া, বোর্ডবাজার, কোনাবাড়ি, কাশিমপুর, টঙ্গী, সালনা এলাকা ঘুরে দেখা গেছে করোনাভাইরাস সংক্রমণরোধে গণপরিবহন বন্ধ থাকায় ট্রাক-পিকআপ, প্রাইভেট কার ও মাইক্রোবাস ভাড়া করে দলে দলে শ্রমিক দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে গাজীপুরে ফিরছেন। প্রতিটি যানবাহনেই ভিড় দেখা গেছে।

একাধিক শ্রমিক জানায়, করোনা প্রতিরোধে বেশির ভাগ গার্মেন্ট থেকে শ্রমিকদের জন্য মাস্ক, স্যানিটাইজার ইত্যাদির ব্যবস্থা করা হয়নি। নিজেদের কিনতে হয়েছে। এসব নিয়ে তাদের মধ্যে উদ্বেগ ও আতঙ্ক রয়েছে। এসব শঙ্কা নিয়েই তারা কাজে যোগ দিতে হচ্ছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কারখানা মালিক জানান, অধিকাংশ কারখানার অর্ডার বাতিল হয়েছে। তাই কারখানাগুলোতে কাজ নেই। শিপমেন্টও বন্ধ। যাদের অর্ডার আছে তাদের শ্রমিকরা কাজ করতে পারবে। বাকিদের আবার কারখানা বন্ধ দিতে হবে। শ্রমিকদের মার্চ মাসের বেতন দেওয়ার জন্যও অনেক মালিক কারখানা খুলছেন। তবে অর্ডার, শিপমেন্ট ও কারখানা বন্ধের কারণে অধিকাংশ মালিককে বেতন দিতে বেগ পেতে হবে।

গাজীপুর শিল্প পুলিশের সহকারী পরিচালক সুশান্ত সরকার কালের কণ্ঠকে জানান, সব কারখানা খোলার কথা থাকলেও বাস্তবে কতগুলো খুলেছে সেটা রবিবার ছাড়া জানার উপায় নেই। যেসব গার্মেন্ট চালু থাকবে তাতে শ্রমিকদের নিরাপত্তা, বিশেষ করে প্রয়োজনীয় স্যানিটাইজার, মাস্ক, গালভস ইত্যাদি রয়েছে কি-না, তা তারা তদারক করবেন। তা ছাড়া শ্রমিকদের বেতন ও কাজ করা না করা নিয়েও যাতে কোনো বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি না হয় তাও তারা কঠোরভাবে নজরদারি করবেন।

আইএনবি/বিভূঁইয়া