৫ আগস্ট পদত্যাগ করেননি শেখ হাসিনা, দাবি স্টেট ডিফেন্সের
কক্সবাজার প্রতিনিধি:এবার বিশ্বের অন্যতম দীর্ঘতম কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতের বিস্তীর্ণ বালিয়াড়ি রাতের আঁধারে দখল করা হয়েছে ।
এক শ্রেণির অসাধু ব্যক্তি সাগরপারের সুগন্ধা ও কলাতলী পয়েন্ট নামে পরিচিত সৈকতের বালুচরে শতাধিক দোকান বসিয়ে দখল করে নিয়েছে। গত শুক্রবার রাতের আঁধারে এসব দোকান বসিয়ে সৈকত দখল করা হয়েছে। সৈকতে দোকানঘর বসিয়ে দখলের ঘটনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে সচেতন ব্যক্তিদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
গতকাল বিকেলে গিয়ে দখলের চিত্র দেখা গেছে। দেশ-বিদেশের পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণ এই দুটি পয়েন্টে দোকান বসানোর কারণে সৈকতের সৌন্দর্য নষ্ট হয়ে গেছে।
রাজধানী থেকে আসা এক পর্যটক বলেন, সৈকতে আকিস্মক দোকান বসানোর ঘটনায় হতবাক হয়ে গেছেন। তিনি বলেন, ‘ভাই, এসব দেখার কি কেউ আছে? আমরা নিঃশ্বাস ফেলার জন্য সৈকতে আসি, কিন্তু সেই সৈকতও এখন জঞ্জালে ভরে গেছে।
রাতের আঁধারে সৈকত দখলের ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সব দোষ চাপানো হয়েছে জেলা প্রশাসনের ওপর। জেলা প্রশাসনের কিছু অসাধু কর্মকর্তা গোপনে কিছু মানুষকে ব্যবসা করার অনুমতি দিয়েছেন। গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী সরকার পরিবর্তনের পর থেকে সৈকতে দোকান বসানোর এসব অনুমতিপত্র ইস্যু করা হয় বলে জানা গেছে। কক্সবাজার সৈকত প্রতিবেশ সংকটাপন্ন এলাকা (ইসিএ) হওয়ায় এবং এ কারণে সৈকতে কোনো স্থাপনা নির্মাণ বা বসানোর বিষয়ে উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকায় জেলা প্রশাসনের প্রদত্ত অনুমতির বিষয়টি এত দিন গোপন রাখা হয়।
রাতের আঁধারে দোকান বসানো ব্যক্তিরা নিজেদের ঝিনুক ব্যবসায়ী পরিচয় দিয়েছেন সাংবাদিকদের কাছে। এ সময় সোহেল নামের একজন দোকান বসানোর যুক্তি দিয়ে বলেন, ‘গত বছরের ৫ আগস্টের আগেও এখানে অনেকেই ব্যবসা করেছে। তো আমরা করলে অসুবিধা কী?’ তবে তিনি বা কেউ বৈধ অনুমতিপত্র দেখাতে পারেননি।
কক্সবাজারের পরিবেশবাদী সংগঠন বন ও পরিবেশ সংরক্ষণ পরিষদের সভাপতি দীপক শর্মা দীপু বলেন, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহউদ্দিনকে গত সপ্তাহে বদলি করা হয়েছে। নতুন জেলা প্রশাসক এখনো যোগদান করেননি।
এমন সুযোগ কাজে লাগিয়েছেন জেলা প্রশাসনের গোপন অনুমতি
নেওয়া ব্যক্তিরা।’
রাতের আঁধারে সৈকতের বালিয়াড়িতে দোকান বসানোর বিষয়টি কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মো. শাহেদুল আলম অকপটে স্বীকার করে কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘সত্যি আমরা অত্যন্ত বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখে পড়েছি। রাতের আঁধারে দেশের এত বড় একটি সম্পদ দখল করে নেওয়ার বিষয়টি কোনো দিন কল্পনায়ও আসেনি।’
সরকার পরিবর্তনের পর সৈকতে ব্যবসা পরিচালনার জন্য জেলা প্রশাসন প্রায় ৩০০টি অনুমতিপত্র গোপনে ইস্যু করেছে কি না প্রশ্নের জবাবে এডিএম বলেন, ‘সঠিক সংখ্যা এ মুহূর্তে বলতে পারব না। তবে কিছু অনুমতিপত্র ইস্যু করা হয়েছে।’
সৈকত দখলের বিষয়ে ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার জোনের অতিরিক্ত ডিআইজি আপেল মাহমুদ বলেন, ‘আমরা সৈকতের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে রয়েছি। রাতের আঁধারে সৈকত দখল করার ব্যাপারটি কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যাবে না। আমরা এসব অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে দেওয়ার জন্য যা করার তা-ই করব।’
আইএনবি/বিভূঁইয়া