আইএনবি ডেস্ক: নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে দুর্নীতির অভিযোগে প্রধান শিক্ষক ইউনুস নবী মানিকের (৫৪) অফিসে ঢুকে তাকে বেধড়ক মারধর ও নাজেহাল করার খবর পাওয়া গেছে।
ধবার (২৩ এপ্রিল) বেলা সোয়া ১১টার দিকে উপজেলার নরোত্তমপুর ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের অফিস কক্ষে এ ঘটনা ঘটে। পরে স্থানীয় কিছু লোকজন ওই শিক্ষককে উদ্ধার করে একটি বাড়িতে আশ্রয় দেয়।
হামলার শিকার নরোত্তমপুর ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইউনুস নবী মানিক জানান, ৫ আগস্ট পরবর্তী গত ২৪ অক্টোবর তৎকালীন বেগমগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোতাসিম বিল্লার সামনে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সাবেক সভাপতি মুক্তার হোসেনের নেতৃত্বে জোর করে তার থেকে পদত্যাগ পত্রে স্বাক্ষর নেওয়া হয়।
তাৎক্ষণিক বিষয়টি তিনি লিখিতভাবে বেগমগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবহিত করেন। এ ঘটনার একদিন পর তিনি বিদ্যালয়ে গেলে মুক্তারসহ তার লোকজন তাকে বাধার সৃষ্টি করে এবং জোরপূর্বক থাকতে দেয়নি। পরে তিনি নোয়াখালী বেগমগঞ্জ সহকারী জজ আদালতে মামলা দায়ের করলে আদালত চলতি বছরের ২০ মে পর্যন্ত ওই পদত্যাগ পত্রের কাযক্রমের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রদান করেন।
বুধবার বেলা সোয়া ১০টার দিকে তিনি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের অফিস কক্ষে প্রবেশ করলে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সাবেক সভাপতি মুক্তার হোসেনের ছোট ভাই একরাম হোসেন, ডাক্তার পারভেজ ও পাক ছমিরমুন্সি বাজার পরিচালনা কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক লুৎফুর রহমানের নেতৃত্বে একদল লোক অফিস কক্ষে ঢুকে।
একপর্যায়ে তারা তাকে বেধড়ক পিটিয়ে শার্ট, প্যান্ট, ছিঁড়ে নাজেহাল করে অফিস থেকে বের করে দেয়।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে নরোত্তমপুর ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিচালনা পরিষদের সাবেক সভাপতি মুক্তার হোসেন অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে বলেন, আমার ভাই ও আমার কোনো লোক এ হামলার সাথে জড়িত নেই। ওই শিক্ষক দুর্নীতিবাজ, এজন্য স্থানীয় লোকজন তাকে পিটিয়ে বের করে দিয়েছে। তারা কেন পিটিয়েছে এর উত্তর আমি জানি না।
তার বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতির তদন্ত চলছে। তিনি স্কুলে ঢুকতে ইউএনও ও শিক্ষা অফিসারের কোনো অনুমতি নেননি। উল্টো সন্ত্রাসী নিয়ে স্কুলে ঢুকেন। এর আগেও তিনি একবার সন্ত্রাসী নিয়ে স্কুলে ঢোকার চেষ্টা করেন।
এ বিষয়ে বেগমগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও নরোত্তমপুর ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি মো. আরিফুর রহমান বলেন, যারা প্রধান শিক্ষককে মারধর করেছে তারাই তাকে বিদ্যালয়ে ঢুকতে দেয় না।
প্রধান শিক্ষক স্কুলে যেতে পারে না। এখন আমরা তো প্রটেকশন দিয়ে তাকে স্কুলে নিয়ে যেতে পারব না। সে ক্ষেত্রে আমি জেলা শিক্ষা অফিসারের মতামত নিয়ে একজনকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বে দিয়েছি।
ইউএনও আরো বলেন, ওই শিক্ষক আদালতে মামলা করেছে। আদালতে যদি রায় পায় ভালো কথা, আদালত তাকে যে নির্দেশনা দেয় সেভাবে পালন করা হবে। প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে কিনা তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তিনি আগে যে প্রতিষ্ঠানে ছিলেন, সেখানেও নাকি তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে।
আইএনবি/বিভূঁইয়া