ভৈরব প্রতিনিধি: কিশোরগঞ্জের ভৈরবে হোটেল পরিষ্কারের সময় ঝাড়ুদারের ময়লা যুবকের শরীরে পড়াকে কেন্দ্র করে একই গ্রামের উত্তরপাড়া ও দক্ষিণপাড়ার বাসিন্দাদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। ঘটনাস্থলে থাকা বিক্ষোভকারীরা ১০টি দোকানে আগুন দিয়েছে।
রোববার (২৪ আগস্ট) দিবাগত মধ্যরাতে পৌর শহরের ভৈরবপুর দক্ষিণপাড়ার কসাই হাঁটি ও উত্তরপাড়া ওমান গ্রুপের মধ্যে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আহতরা ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও বিভিন্ন প্রাইভেট ক্লিনিকে চিকিৎসা নেন।
খবর পেয়ে ভৈরব থানা পুলিশ ও সেনাবাহিনী পরিস্থিতি শান্ত করে। এ সময় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে ফায়ার সার্ভিস।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রোববার রাত ১১টায় ভৈরব বাজারে এশা হোটেল নামে আবাসিক হোটেলের ঝাড়ুদার হোটেল পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করার সময় ইটের কণাসহ ময়লা পড়ে উত্তরপাড়া এলাকার এক যুবকের শরীরে। পরে ঝাড়ুদার ও হোটেল ম্যানেজারের সঙ্গে ওই যুবকের বাকবিতণ্ডা হয়। বিষয়টি তখনই সংঘর্ষে রূপ নেয়। রাত ১২টায় বাজারের সংঘর্ষটি ভৈরবপুর উত্তরপাড়ার ওমান গ্রুপ ও দক্ষিণপাড়ার কসাই হাঁটির মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে।
উত্তরপাড়ার মনমরা ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় ঘণ্টাব্যাপী চলে এই সংঘর্ষ। উভয়পক্ষের যুবকদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে উভয়পক্ষের ১০ জন আহত হন। এসময় রাস্তার পাশে থাকা প্রায় ১০টি দোকানে আগুন ধরিয়ে দিয়ে পুড়িয়ে দেয়া হয়।
এশা হোটেল ম্যানেজার মহিউদ্দিন বলেন, হোটেল ঝাড়ু দিতে গিয়ে ময়লা ছিটকে পড়েছে। তবে ওই যুবকের শরীরে পড়েনি। তবু সে দলবল নিয়ে এসে হোটেলে হামলা চালিয়েছে ও হোটেল ভাঙচুর করেছে। আমি প্রাণে বেঁচে গেলেও আহত হয়েছি।
এ বিষয়ে আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত দোকানদার নাঈম মিয়া বলেন, ঝগড়ার সঙ্গে আমরা জড়িত না। রাস্তার পাশে দোকান থাকাই আমাদের অপরাধ। আমাদের নিঃস্ব করে দিল।
এ বিষয়ে ভৈরবের ফায়ার স্টেশন অফিসার আজিজুল হক রাজন বলেন, মারামারির পর দোকানে আগুন দেওয়ার খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে আসি। ১ ঘণ্টার চেষ্টায় ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনে। আগুনে মনমরা এলাকায় মার্কেটে ১০টির মতো দোকান পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এতে দোকান মালিকদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
ভৈরব সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার নাজমুস সাকিব বলেন, তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ভৈরবপুর উত্তরপাড়া ওমান গ্রুপ ও দক্ষিণপাড়ার কসাই হাঁটির মধ্যে সংঘর্ষ হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে সেনাবাহিনীসহ যৌথ অভিযানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। দুইপক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আইএনবি/বিভূঁইয়া