নোয়াখালী প্রতিনিধি: বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে নোয়াখালীতে গত ২৪ ঘণ্টায় ২৮৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
জেলায় চলতি মৌসুমে একদিনে এটি সর্বোচ্চ বৃষ্টির রেকর্ড। এতে উপকূলীয় কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার মুছাপুর ও চরহাজারী ইউনিয়ন, চরএলাহী ও হাতিয়ার বিভিন্ন নিচু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। বিভিন্ন গ্রামে তলিয়ে গেছে বৃষ্টি-জোয়ারের পানিতে।
শুক্রবার (৩০ মে) সকালে জেলা আবহাওয়া পর্যবেক্ষণকেন্দ্রের এক বার্তায় গত ২৪ ঘণ্টায় নোয়াখালীতে ২৮৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতের তথ্য জানানো হয়েছে।
জেলা আবহাওয়া পর্যবেক্ষণকেন্দ্রেরভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম জানান, বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় ২৮৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। গভীর নিম্নচাপের কারণে আরও বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে।
এদিকে, দ্বীপ উপজেলা হাতিয়াসংলগ্ন বঙ্গোপসাগর উত্তাল রয়েছে। বড় বড় ঢেউ আছড়ে পড়ছে তীরে। নদ-নদীর পানিও বৃদ্ধি পেয়েছে। জোয়ারের তোড়ে কোম্পানীগঞ্জ ও হাতিয়ার কয়েকটি বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে ঘরবাড়ি ডুবে গেছে । ভেসে গেছে অসংখ্য মাছের ঘের ও পুকুর। ডুবে গেছে ধান, শাকসবজি ও অন্যান্য ফসল। হাতিয়ার মেঘনা নদীতে এমভি ফাহিম নামে একটি পণ্যবাহী ট্রলার চার কোটি টাকার মালামাল নিয়ে ডুবে যায়। উপকূলীয় এলাকায় ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কসংকেত বলবৎ রয়েছে।
এছাড়া নোয়াখালী জেলা কারাগার সড়ক, জজকোর্ট-কোর্টবিল্ডিং সংযোগ সড়ক, মাইজদী পাবলিক কলেজ সড়ক, আল ফারু একাডেমি সড়ক, নোয়াখালী সাইন্স অ্যান্ড কমার্স কলেজের সামনের সড়কসহ শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক পানিতে তলিয়ে গেছে।
এতে এসব সড়কে যাতায়াতকারী যানবাহনের চালক ও পথচারীরা চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। নোয়াখালী পৌরসভার ড্রেন এবং খালগুলোতে ময়লা আবর্জনা জমে থাকার কারণে পানি নামতে না পারায় এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে বলে স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন।
এদিকে বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে স্বাভাবিকের চেয়ে অতিরিক্ত জোয়ারের পানি ঢুকতে শুরু করেছে নিঝুম দ্বীপের বিভিন্ন এলাকায়। এতে দুর্ভোগে পড়ে মানুষ ও জাতীয় উদ্যানের বনের হরিণ। এ ছাড়া হাতিয়ার চর ঈশ্বর, নলচিরা, ঢালচর, সুখচর, চরঘাসিয়াসহ বিভিন্ন চরের সড়ক ও বাড়িঘরে জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে। উপকূলীয় এলাকার মানুষ আতঙ্কিত জোয়ারের অতিরিক্ত পানির ভয়ে।
নোয়াখালী জেলা প্রশাসক খন্দকার ইসতিয়াক আহমদ বলেন, বৈরী আবহাওয়া মোকাবিলায় আমাদের সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে। জানমালের নিরাপত্তা রক্ষায় উপজেলা প্রশাসন, পানি উন্নয়ন বোর্ড, রেড ক্রিসেন্টসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কাজ করছে।
আইএনবি/বিভূঁইয়া