স্ত্রীকে হত্যার ঘটনায় স্বামী গ্রেফতার

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি: রাউজানে র‌্যাব-৭ সদস্যরা স্ত্রীকে শ্বাসরোধ করে হত্যা মামলার আসামী স্বামী মো. এনামকে (৩০) গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছেন । মো. এনাম একই থানার পূর্বটিলা জানিপাথর এলাকার মৃত জাবেদ আলীর পুত্র।

গতকাল মঙ্গলবার র‌্যাব সূত্রে জানা গেছে, নিহত ভিকটিম নূরজাহান মনির (২১) সঙ্গে চার বছর আগে এনামের মোবাইল ফোনে পরিচয়ের সূত্রে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পরবর্তী সময়ে তাদের মধ্যে সামাজিকভাবে বিয়ে হয়। তাদের তিন বছরের একটি কন্যাও রয়েছে।

বিয়ের কিছুদিন পর নূরজাহান সামান্য অসুস্থ হওয়ায় এনাম বিভিন্ন অজুহাতে তাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন শুরু করেন। গত ১৭ সেপ্টেম্বর এনাম ওমান থেকে দেশে এলে পরদিন ভিকটিম তার মেয়েকে নিয়ে স্বামীর বাড়িতে এলে পুনরায় নির্যাতন করতে থাকে। গত ২৫ সেপ্টেম্বর এনাম ভিকটিমকে শারীরিক নির্যাতন করলে অসুস্থ অবস্থায় তার বাবার বাড়িতে চলে যান। সেখান থেকে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে আবার স্বামীর বাড়িতে ফিরে আসেন। গত ১ অক্টোবর দুপুরে দেবর মো. ইকরাম ভিকটিমের বাবাকে ফোন করে জানান যে, তার মেয়ে মারা গেছে। পরে ভিকটিমের বাবা স্থানীয় লোকজনের কাছ থেকে জানতে পারেন, গুদামঘরের ভেতরে ভিকটিম এবং তার স্বামী মো. এনামের মধ্যে ঝগড়া হয় এবং এ সময় ভিকটিমের আর্তচিত্কার শুনতে পান। কিছুক্ষণ পর এনামকে একটি বস্তা কাঁধে নিয়ে গুদামঘর থেকে বের হতে দেখা যায়। এ সময় ভিকটিমের শাশুড়ি ভিকটিমের ঘরে গিয়ে ভিকটিমকে অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে আশপাশের লোকজনকে জানালে প্রতিবেশীরা বুঝতে পারে যে, মনি মারা গেছে। এ ঘটনায় ভিকটিমের বাবা বাদী হয়ে রাউজান থানায় স্বামী এনামকে একমাত্র আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

র‌্যাব-৭-এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (গণমাধ্যম) মো. নূরুল আবছার জানান, স্ত্রীকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করার পর মামলা দায়ের হওয়ায় স্বামী এনাম পলাতক ছিলেন। গত সোমবার সন্ধ্যায় কুমিল্লা জেলার চৌদ্দগ্রাম বাজার এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে এনাম জানিয়েছেন, ওমানে থাকাবস্থায় ১০ থেকে ১৫ জন মেয়ের সঙ্গে তার বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক ছিল। বিবাহের পর থেকে স্ত্রীর মধ্যে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে পারিবারিক কলহ চলছিল। তাই ওমানে থাকাবস্থায় এনাম দ্বিতীয় বিবাহ করার সিদ্ধান্ত নেন।

তিনি আরও জানান, ঘটনার দিন সকালে তার পরকীয়া সম্পর্কের জের ধরে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে এনাম তার স্ত্রীকে ওড়না দিয়ে গলা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন।

 

আইএনবি/বিভূঁইয়া