সর্বাত্মক আক্রমণের প্রস্তুতি নিচ্ছে রাশিয়া

আর্ন্তজাতিক ডেস্ক:যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা গোয়েন্দা তথ্যের বরাত দিয়ে বলেছেন, ইউক্রেনে সর্বাত্মক আক্রমণের প্রস্তুতিকে এগিয়ে নিচ্ছে রাশিয়া। তবে হামলার জন্য চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে কিনা, তা পরিষ্কার নয়। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেস ও ইউরোপীয় মিত্রদের ব্রিফ করেন ওই মার্কিন গোয়েন্দা কর্মকর্তারা।

মার্কিন কর্মকর্তাদের মতে, রাশিয়া তার পশ্চিমাপন্থী প্রতিবেশী ইউক্রেনের সীমান্তে ১ লাখ ১০ হাজার সৈন্য জড়ো করেছে।

তবে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন আসলেই ইউক্রেনে আক্রমণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কিনা, তা নিশ্চিত হতে পারেননি তাঁরা। ওই গোয়েন্দা কর্মকর্তারা মার্কিন আইনপ্রণেতাদের সতর্ক করে দেন যে, সীমান্তে রাশিয়ার সৈন্য এমন হারে বাড়ানো হচ্ছে, যা পুতিনকে পুরো মাত্রার আক্রমণের প্রয়োজনীয় শক্তি দেবে। ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি নাগাদ ইউক্রেন সীমান্তে প্রায় দেড় লাখ সৈন্য জড়ো করা হতে পারে।

 

যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা বলছেন, আগামীতে ইউক্রেনে পূর্ণ মাত্রায় আক্রমণের জন্য প্রয়োজনীয় সামরিক সক্ষমতার প্রায় ৭০ শতাংশ প্রস্তুত করেছে রাশিয়া। নাম উল্লেখ না করে মার্কিন কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে বিবিসি জানিয়েছে, ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি নাগাদ মস্কো আরো ভারী অস্ত্র-সরঞ্জাম ইউক্রেন সীমান্তে নিয়ে যেতে সক্ষম হবে। মার্কিন কর্মকর্তারা অবশ্য এ-ও বলেছেন যে সংকট এখনো কূটনৈতিক উপায়ে সমাধান করা সম্ভব বলেই তারা মনে করেন।

রাশিয়া বরাবরই ইউক্রেন আক্রমণ করার পরিকল্পনার কথা অস্বীকার করে আসছে।

যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের হিসাব মতে, মস্কো যদি পূর্ণমাত্রায় আক্রমণের সিদ্ধান্ত নেয় তবে আক্রমণকারী বাহিনী রাজধানী কিয়েভ দখল করে নিতে পারে। তারা ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে ক্ষমতাচ্যুত করতে পারে।

মার্কিন গোয়েন্দাদের অনুমান, এই সম্ভাব্য আক্রমণে ২৫ থেকে ৫০ হাজার বেসামরিক নাগরিক নিহত হবে। এছাড়া ৫ হাজার থেকে ২৫ হাজার ইউক্রেনীয় সৈন্য এবং ৩ হাজার থেকে ১০ হাজার রুশ সৈন্য মারা যাবে। আক্রমণ হলে ১০ থেকে ৫০ লাখ শরণার্থী পোল্যান্ডের উদ্দেশ্যে যাত্রা করতে পারে।

এদিকে রবিবার ইউক্রেন জোর দিয়ে বলেছে, আক্রমণের চেয়ে কূটনীতির মাধ্যমে রাশিয়ার সঙ্গে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা নিরসনের সুযোগ বেশি। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির উপদেষ্টা মাইখাইলো পোদোলিয়াক এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘পরিস্থিতির একটি ন্যায্য মূল্যায়ন এ ইঙ্গিতই দেয় যে, আরো উত্তেজনা বৃদ্ধির হুমকির চেয়ে কূটনৈতিক সমাধান খুঁজে পাওয়ার সম্ভাবনা এখনও যথেষ্ট বেশি। ’

পোদোলিয়াক বলেন, রাশিয়া গত বসন্তে ইউক্রেনের সীমান্তে বাহিনী মোতায়েন করার পর থেকে নিয়মিতভাবেই পর্যায়ক্রমে সৈন্য ও অস্ত্র মোতায়েন করছে। নিরবচ্ছিন্ন বিশাল মানসিক চাপ সৃষ্টি করতেই রাশিয়া এ কাজ করছে। তিনি বলেন, ‘আমাদের গোয়েন্দা বিভাগ ও সশস্ত্র বাহিনীর জন্য রাশিয়ার এই কার্যকলাপ একেবারেই বিস্মিত হওয়ার মত নয়। ’ রাশিয়ার কার্যকলাপ সম্পর্কে ইউক্রেনের পশ্চিমা সমর্থকেরা ‘উল্লেখযোগ্য পরিমাণ’ গোয়েন্দা তথ্য পেয়েছে বলে উল্লেখ করেন পোদোলিয়াক। সূত্র: এএফপি, বিবিসি

আইএনবি/বিভূঁইয়া