শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলায় সাজাপ্রাপ্ত সাত্তার মারা গেছেন

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি: সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলায় ২০০২ সালের ৩০ আগস্ট তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলার তিনটি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামি ও কয়লা ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য আবদুস সাত্তার (৫৮) মারা গেছেন।

সাত্তার কলারোয়া উপজেলার কয়লা ইউনিয়নের কয়লা গ্রামের বাসিন্দা। তার বাবার নাম আবদুল লতিফ। তিনি কয়লা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকও ছিলেন।

সোমবার (২৯ জানুয়ারি) সকালে সাতক্ষীরা জেলা কারাগারের সুপারিনটেনডেন্ট আবুল বাশার তার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন।

রোববার রাত সাড়ে আটটার দিকে হঠাৎ তিনি অসুস্থ হলে তাকে সাতক্ষীরা জেলা কারাগার থেকে সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক সাইফুল ইসলাম মৃত ঘোষণা করেন।

সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক ডা. সাইফুল ইসলাম জানান, কারাগার থেকে রোববার রাত ৮টা ১০ মিনিটে আব্দুস সাত্তারকে জরুরি বিভাগে আনা হলে পরীক্ষা করে তাকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়।

হাসপাতালে আনার আগেই হৃদরোগে তার মৃত্যু হলেছিলো বলে জানান তিনি।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ২০০২ সালের ৩০ আগস্ট তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী শেখ হাসিনা ধর্ষণের শিকার এক নারীকে দেখতে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে যান। সেখান থেকে যশোরে ফেরার পথে কলারোয়া উপজেলা বিএনপির কার্যালয়ের সামনে তার গাড়িবহরে হামলার ঘটনা ঘটে। এ সময় শেখ হাসিনাকে লক্ষ্য করে গুলি এবং বোমা বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। অল্পের জন্য বেঁচে যান শেখ হাসিনা। বহরে থাকা ১৫-২০টি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। হামলায় শেখ হাসিনার গাড়িবহরে থাকা ১২ নেতা-কর্মী আহত হন। হামলায় সাতক্ষীরা-১ আসনের তৎকালীন সংসদ সদস্য হাবিবুল ইসলাম ও তার নেতা-কর্মীরা জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ উঠে।

এ ঘটনায় কলারোয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোসলেম উদ্দীন বাদী হয়ে থানায় মামলা করতে গেলে মামলাটি রেকর্ড করেনি পুলিশ। ঘটনার ১২ বছর পর ২০১৪ সালের ১৫ অক্টোবর সাতক্ষীরা আদালতে একটি মামলা করা হয়। আদালত কলারোয়া থানায় মামলাটি রেকর্ড করার আদেশ দেন।

হামলার ঘটনায় বিস্ফোরক দ্রব্য ও অস্ত্র আইনের দুটি ও হামলার অপর একটি মামলায় বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য হাবিবুল ইসলামসহ চারজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন আদালত। মামলায় আরও ৪৪ আসামিকে ৭ বছর ও সাড়ে ৩ বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এই ৩ মামলায় সাত্তারের সাড়ে ৩ বছর কারাদণ্ড হয়। ৫০ জন আসামির মধ্যে সাত্তারের আগে আরও ৩ জন আসামি কারাগারে মারা গেছেন। সাজাপ্রাপ্ত ৪৬ জনের মধ্যে বর্তমানে ৩৮ জন কারাগারে আছেন। বাকি ৮ জন পলাতক রয়েছেন।

সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মহিদুল ইসলাম জানান, ময়নাতদন্ত ও আইনি প্রক্রিয়া শেষে সাত্তারের মরদেহ তার স্বজনদের হাতে তুলে দেওয়া হবে।

 

আইএনবি/বিভূঁইয়া