শরীফের বাসায় আড্ডাখানা (ভিডিও) :এমডি বাবুল ভূঁইয়া

যাবে নাকো ছিড়ে বন্ধুত্বের বন্ধন

ডেস্ক: বন্ধু শরীফ মাহমুদের বাসায় সকল বন্ধুদের উপস্থিতি সত্যিই ভালোলাগার এক স্মরণিয় বন্ধন ছিলো। সকল বন্ধুদের স্ত্রী-সন্তান, বান্ধবীদের স্বামী – সন্তান নিয়ে খুব আনন্দঘন পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।

রাজধানীর চার দেওয়ালের ভিতরে থেকে থেকে বাচ্চা গুলোর ধম বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিলো। কোবিড-১৯ এর জন্য স্কুল বন্ধ থাকায় বাহিরে খুব একটা বের হতে পারেনি বাচ্চা গুলো। ঠিক সেই সময় হাতের মোবাইলটা বেজে উঠলো। বন্ধু শরীফ মাহমুদের ফোন। সে জানালো শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর ) সহপরিবারে তার বাসায় নিমন্ত্রন। উপলক্ষ্য জানতে চাওয়ার সাথে সাথে সে  উত্তর দিলো বন্ধুদের আড্ডা। রুমানা, সাহিদা, ছালমা, ফারহানা, জুয়েল, খালেদ, সুমন, মাহাবুব, মাজহারুল, তুষার, আকমল সহ সবাই আসবে। কথামতো আমিও চলে গেলাম নির্দিষ্ট সময়ে। তার বাসায় আমাদের পাশাপশি সবার  ছেলে-মেয়ে গুলো খুব এনজয় করেছে।

আমাদের এই আনন্দকে আরো বাড়িয়ে দিয়েছে দুর-দুরান্তে থাকা বন্ধুরা ভিডিও কলে সংযোগ হয়ে। হোমনা থেকে বান্ধবী শামীমা, বন্ধু শাহিন (ফ্রান্স), বিল্লাল হোসেন (লেবানন), এমরান হোসেন ( কাতার), এবং আমাদের সকল বন্ধু -বান্ধবীদের প্রিয় বন্ধু দিলরুবা আনম ডালিয়া (লন্ডন) সহ অনেকেই সারাক্ষণ আমাদের সাথেই ছিলো ভিডিও কলের মাধ্যমে। তারাও আবেগে আপ্লোত হয়ে গিয়েছিলো।

বন্ধু শরীফের সুমধুর সুরে (কফি হাউজের আড্ডাখানা অনুকরেনে আমাদের বন্ধুদের নিয়ে শরীফের লেখা) গান আমাদের হৃদয়কে নাড়া দিয়েছে। সৃষ্টি হয়েছে এক আবেগময় নিরবতা। নিজের অছান্তে চোখ থেকে দু’ফোটা পানি পরেছিলো। কেউ দেখে ফেলবে ভয়ে তাড়াতাড়ি মুছে ফেলেছে অনেকেই। কিন্তু সবার চোখের জল দৃষ্টিগোচর হয়েছে সবার কাছেই। কখনো শরীফের কন্ঠে ফানি গান শোনে হাসতে হাসতে পেট ব্যাথার উপক্রম হয়েছে।

সেই মিলন মেলায় মনে করিয়ে দিয়েছে স্কুল জীবনে ফেলে আশা রং-বেরংয়ের নানা স্মৃতিবিজড়িত দিনগুলোর কথা। সবাই একসাথে মিলিত হতে পেরে খুবই আনন্দিত হয়েছি। কিছু সময়ের জন্য হলেও সুখ খোঁজে পেয়েছি। আমরা কেউ হারিয়েছি বাবা, কেউ মা, আবার কেউবা মা-বাবা দু’জনকেই হারিয়েছি কিংবা হারিয়েছি পরিবারের খুব কাছের মানুষটিকে। যার স্মৃতি বুকে লালন করে ধুকে ধুকে মরছি। আমাদের মনের ভিতরে রয়েছে নানা রকম ছোট ছোট কস্টের পাথর। যা একে অপরের সাথে শেয়ার করে হালকা করতে পেরেছি। এটাই হলো বন্ধু বা বন্ধুত্ব। এমন কিছু কস্ট আছে যা আপন সহোদর ভাই-বোন কিংবা অন্য কারো কাছে বলা যায়না। মনের ভিতরে পুষে রেখে হয়ে যাচ্ছি মানসিকভাবে অসুস্থ। সেই না বলা কথা গুলো বন্ধুদের সাথে ভাগাভাগি করে অনেকেই নিয়েছি। যে কথা গুলো কাউকে বলা যায়না সেই কথা গুলো নিমিষেই বলা যায় ভালো মনের বন্ধুদের কাছে। আমার বন্ধুরা সবাই ভালো। যার যার অবস্থানে সবাই প্রতিষ্ঠিত।

 

আরেক বন্ধু মাহাবুব…
তার কন্ঠে বিরহ গান শোনেও কেউ কেউ আবেগপ্লোত হয়ে পরেছিলো। সব কিছু স্বাভাবিক করে দিলো বন্ধু মাহাবুব এর ছোট ছেলের একটি গানের মাধ্যমে। দারুণ গেয়েছিলো বাবাটি।

বান্ধবীদের হাজবেন্ড গুলোও চমৎকার। কোন অহংকার বা ডিমান্ড নেই। একবাক্যে মিশে গেলো আমাদের সাথে। মনে হচ্ছে তারাও আমাদের সেই ক্লাসে থাকা বন্ধুদের মতো। নাচে-গানে জমিয়ে তোলেছিলো। স্যালুট সেইসব বান্ধবীদের জামাই গুলোকে। কারণ, উনারা সাপোর্ট না দিলে হয়তো বান্ধবীরা এই আনন্দ উপভোগ করতে পারতোনা।

 

বন্ধুদের বউ…
ভাবিদের কথা কি আর বলবো? সবাই অসাধারণ…ভালোলাগার ভালোবাসার মন নিয়ে মিশে গেলো আমাদের বান্ধবীদের সাথে। তারাও আমাদের শিখিয়ে দিয়েছে…মানবতা কাকে বলে, শালীনতা কি…কিভাবে সবাইকে আপন করে নেওয়া যায়। পরিবারের একঘেয়েমি কাটিয়ে তারাও আমাদের আড্ডায় শরীক হয়েছে। ভালোবাসার সেই ভাবীদের জন্যও স্যালুট…।

সবাইকে ভালোবাসা জানাচ্ছি হৃদয়ের গভীর থেকে।

যাবে নাকো ছিড়ে বন্ধুত্বের বন্ধন,
থাকবে এই মনে হৃদয়স্পন্দন হয়ে।।

লেখক
এমডি বাবুল ভূঁইয়া