রাজাকারের উত্তরাধিকারদের আ.লীগের মনোনয়ন না দেয়ার দাবি মুক্তিযোদ্ধাদের

জাহাঙ্গীর মোল্যা :
স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি রাজাকার পরিবারের সদস্যদের আওয়ামী লীগের দলীয় পদ এবং সব নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন না দেয়ার দাবি জানিয়েছে মুক্তিযোদ্ধারা।
আজ বৃহস্পতিবার  (৭ জানুয়ারি ২০২০) জাতীয় প্রেসক্লাবের আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়।বাংলাদেশ সচেতন মুক্তিযোদ্ধা ও প্রজন্ম পরিষদ আয়োজিত অনুষ্ঠানে শতাধিক মুক্তিযোদ্ধা ও পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়- বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর তাঁর সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও বাঙালি জাতির হারানো গণতান্ত্রিক অধিকার পুনুরূদ্ধারের সংগ্রামের পথে যাত্রা শুরু করে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। অনেক অশ্রæ, ত্যাগ ও রক্তের বিনিময়ে বাঙালি জাতি ফিরে পায় ভাত ও ভোটের অধিকার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকার বিভিন্ন ক্ষেত্রে যুগান্তকারী উন্নয়নের ফলে বিশ্বের বুকে বাংলাদেশকে একটি আত্মমর্যাদাশীল জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে, কিন্তু স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তি, জাতির পিতার সংগঠন আজ সেই স্বাধীনতা বিরোধী তথা রাজাকার, আলবদর, আল শাসম্ যারা আমাদের স্বাধীনকতা সার্বভৌম রাষ্ট্র গঠনে বিরোধীতা করেছে এবং জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানকে স্বপরিবারে হত্যার সাথে জড়িত ছিল তাদের পরিবারের সদস্যদের স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তি, জাতির পিতার হাতে গড়া সংগঠনের বিভিন্ন গরুত্বপূর্ণ পদে দেখা যাচ্ছে, যা অত্যন্ত দুঃখ জনক। এজন্য আমরা দেশ স্বাধীন করি নাই, এমনকি কোথাও কোথাও আওয়ামীলীগ এর দলীয় মনোনয়ন নিয়ে জনপ্রতিনিধি হয়ে স্বাধীনতা বিরোধী তথা আলবদর, আল শাসম্ এর লক্ষ্য উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন করছে।

সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ জয়নাল আবেদীন লিখিত বক্তব্যে বলেন, আমরা বীর মুক্তিযোদ্ধারা স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তির বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া কাউকে কোথাও যেন বীর মুক্তিযোদ্ধাদের চেতনায় বিশ্বাসী, বঙ্গবন্ধুর দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ থেকে যেন দলীয় মনোনয় না দেওয়া হয় তার জন্য প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামীলীগ সভানেত্রীর শেখ হাসিনার নিকট জোর দাবী জানাচ্ছি। একই সঙ্গে বলতে চাই স্বাধীনতা বিরোধী এই রাজাকার, আল বদর, আল শামস্ পরিবারের কোন সদস্যকে দলীয় মনোনয়ন দিলে আমাদের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অসম্মান করা হবে। যদি দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয় এর প্রতিবাদে আমরা সচেতন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও প্রজন্ম পরিষদ রাজপথে নামতে বাধ্য হবো।
লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, কিছুদিন পূর্বে গঠিত কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ কমিটিতে কোষাধ্যক্ষ পদে বৃহত্তর কুমিল্লায় শান্তি কমিটির সাধারণ সম্পাদকের নাতি নাইম ইউসুফ সেইনকে স্থান দেয়া হয়েছে। তার দাদা আব্দুস সামাদ ১৯৭২ সালে দাউদকান্দি থানার মামলা নং- ১০/০৬/১৯৭২ এর এজাহারযুক্ত রাজাকার আসামী হিসেবে চিহ্নিত হয়ে কারা বরণ করেন। কুমিল্লা জি.আর.নং-৪১৩/৭২। এছাড়া বাংলাদেশ সরকার এর মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ২০১৬ সালে প্রকাশিত রাজাকারের তালিকায় ৬০৯ নম্বর এবং দাউদকান্দি উপজেলা বীর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিল কর্তৃক প্রকাশিত রাজাকারের তালিকায় ৬ নম্বর তার নাম রয়েছে। সারাদেশে আরও এরকম হাজারো উদাহরণ রয়েছে বলে অভিযোগ করেন তারা।
সংগঠনটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা হুমায়ন কবির বাবুল বলেন, আওয়ামীলীগের কমিটিতে রাজাকার, আলবদর, আল শামস পরিবারের কোন সদস্যকে যেন দলীয় পদবী না দেওয়া হয়। আর বর্তমানে যারা পদবী নিয়ে আছেন অনতিবিলম্বে তাদেরকে যেন বহিষ্কার করা হয়। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানী ভাতা ২০,০০০ টাকা পাওয়ার জোর দাবী জানাই। সুদ বিহীন বীর মুক্তিযোদ্ধাদের গৃহ নির্মান ঋণ দেওয়া নিশ্চিত করার দাবি জানান তিনি।