রাজধানীর ধানমন্ডিতে ক্লাব ৯৪ ও ৯৬ এর জমকালো অনুষ্ঠান (ভিডিও)

নিজস্ব প্রতিবেদক: সোস্যাল মিডিয়া ভিত্তিক গ্রুপ ৯৪ এবং ৯৬ ক্লাবের প্রায় চার শতাধিক বন্ধুরা মিলিত হন একসাথে একমঞ্চে জমকালো অনুষ্ঠানে।

গতকাল শুক্রবার (১৬ অক্টোবর) ধানমন্ডি কনভেনশন সেন্টার হল রুমে ক্লাবের প্রায় চার শতাধিক বন্ধুরা মিলিত হয়েছিল। এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন ক্লাবের উদ্দ্যোক্তা ঢাকা কলেজের প্রাক্তন শিক্ষার্থী সায়েম ইবনে ইসলাম অনিক।

শুনশান নীরবতা ভাঙে কোলাহলে। বয়সের বাঁধ ভেঙ্গে সবাই মেতে উঠে আনন্দে উচ্ছাসে। আকাশি রঙের টি-শার্ট এর রং ছড়াচ্ছিল পুরো কনভেনশন হল জুড়ে । এ যেন ফিরে যাওয়া সেই কিশোর-তারুণ্যের রঙ্গমঞ্চ। গলা ছেড়ে বন্ধুদের গান গাওয়া, কাঁধে কাঁধ রেখে ছবি তোলা, স্মৃতি রোমন্থন করেই দিনটি কাটিয়েছেন ক্লাব ৯৪ এবং ৯৬ ব্যাচের সকল বন্ধুরা।

ক্লাবরে প্রতিষ্ঠাতা এবং গতকাল অনুষ্ঠান আয়োজনের উদ্যোক্তা অনিক আমাদের আইএনবির নিজস্ব প্রতিবেদককে বলেন, ছোটবেলা থেকেই আমি দুর্বল ছিলাম বিভিন্ন সামাজিক ও সাংগঠনিক কাজে। সামাজিক কাজ গুলো করে আমি নিজে আত্মতৃপ্তি পাই। সেই আত্মতৃপ্তি থেকেই আমি গঠন করি ক্লাব ৯৪ এবং ৯৬ ব্যাচ নামে সোস্যাল মিডিয়া ভিত্তিক বন্ধুদের ক্লাবটি।

তিনি আরো বলেন, ঢাকা কলেজে অধ্যয়নরত অবস্থায় রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন করতাম। সেখান থেকেই মূলত ব্যাচের বন্ধুদের সম্মিলন ঘটাতে উদ্বুদ্ধ হই। এবং মোস্তাফিজুর রহমান রাজু, সাইদ সিকদার সহ গত বছর ২৭ জুলাই একটি ফেসবুক গ্রুপের মাধ্যমে সকল বন্ধুদের জড়ো করি। রাজধানীর লালবাগ এলাকায় একটি এতিমখানায় শিশুদের মাঝে খাবার ও কম্বল বিতরণের মাধ্যমে ২০১৯ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসে আমরা আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু করি। এরপর থেকে আমরা থেমে নেই। বিভিন্ন সময়ে বন্ধুরা সারাদেশের অন্তত ১০টি ইভেন্টে মিলিত হয়েছি। করোনাকালে ব্যাচের তরফ থেকে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছি। ইতিমধ্যে সারা দেশের ৬৪ জেলায় এবং বিশ্বের অন্তত পাঁচটি দেশে আমাদের প্রতিনিধি রয়েছে।

 

অনিক বলেন, আজকের আয়োজনে অন্তত চার শতাধিক বন্ধু উপস্থিত হয়েছে। ফেসবুক গ্রুপে ইতিমধ্যে প্রায় ৫ হাজার সাত শত বন্ধু যুক্ত হয়েছে। এই সংগঠন নিয়ে আমাদের সবার অনেক স্বপ্ন ও পরিকল্পনা রয়েছে। প্রথমত এসএসসি ১৯৯৪ ও এইচএসসি ১৯৯৬ ব্যাচের প্রত্যেক বন্ধুকে একই প্লাটফর্মে নিয়ে আসা। এর মাধ্যমে একটা শক্ত বন্ধন তৈরি হবে বলে আমি করি। আমি এবং আমরা চাই নিজেদের মধ্যে একটা ভালো সম্পর্ক তৈরি হোক।

 

দেশের নাগরিক হিসেবে আমাদের উপর সামাজিক যে দায়বদ্ধতা আছে, আমরা চেষ্টা করবো সে দায়িত্ব সামাজিকভাবে পালন করার। ব্যক্তিগতভাবে আমার ইচ্ছে সামাজিক কর্মকাণ্ড ও বিনোদনের মাধ্যমে একদিন ৯৪ ও ৯৬ ব্যাচ একটা ব্র্যান্ড হিসেবে বাংলাদেশে উদয়মান হবে।

 

বিশেষ করে আজকের অনুষ্ঠান সার্থক করতে যে সকল বন্ধুরা রাত দিন পরিশ্রম করেছেন তাদের কথা না বললেই নয়। আমার খুব কাছের বন্ধু মিজান, দেলোয়ার, শরিফ মাহমুদ, রাজু, সাইদ, সুমন, মাসুদ ও প্যানেলের সকল বন্ধুরা। এছাড়াও আমার আরেকজন বাল্যবন্ধু লেখক ও সাংবাদিক এমডি বাবুল ভূঁইয়া আমাদের ক্লাবের বন্ধুদের মিলন মেলাকে বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রকাশ করে দেশব্যাপি আমাদের পরিচিত এবং কর্মকান্ড তোলে ধরেছে।

প্রতিবেদকের আরেক প্রশ্নের উত্তরে অনিক বলেন, এসএসসি ১৯৯৪ ও এইচএসসি ১৯৯৬ ব্যাচকে কেন্দ্র করেই আমাদের ক্লাবের নামকরন করেছি ক্লাব ৯৪ এবং ৯৬ ।

ঢাকা কলেজের এই শিক্ষার্থী ছাত্রজীবন থেকেই বেশ ভালো সংগঠক ছিলেন। ঢাকা কলেজে অধ্যয়নরত অবস্থায় সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠনে নেতৃত্ব দিয়েছেন অনিক।

আয়োজকরা বলেন, ‘করোনা না থাকলে আরও অন্তত কয়েকগুণ বেশি বন্ধু উপস্থিত হতো।

অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া আমাদের বন্ধু নিগার সুলতানা খুবই উৎফুল্ল হয়ে বলেন, করোনার এই সময়টাতে ঘরে বন্দি থেকে মানসিক যন্ত্রণায় ভুগছিলাম। আজ একটা দিনে সেইসব অবসাদ ভুলে মনে হচ্ছে ফেলে আসা শৈশবে হারিয়ে গেলাম। বন্ধুত্ব যেখানে, নেই কোন ক্লান্তি কিংবা অবসাদ। এখানেই শুধুই আনন্দ আর উৎসবে মেতে থাকা এক সম্পর্ক।

২০১৯ সালের ২৭ জুলাই শুরু হওয়া এই ক্লাবে ইতিমধ্যে প্রায় পাঁচ হাজার সাতশত বেশি মানুষ যুক্ত হয়েছে। যাদের মধ্যে ৬৪ জেলা ও বিশ্বের অন্তত ৫টি দেশে প্রতিনিধি রয়েছে। সারাদেশে ছোটবড় অন্তত দশটি বন্ধু আড্ডার আয়োজন করে। করোনাকালে সামাজিক দায়িত্ববোধ থেকে অসহায় মানুষের পাশে দাড়ায় তাঁরা। আমি সত্যিই বন্ধুদের এসব কর্মকান্ডে অনেক আনন্দিত।

উদ্যোক্তাদের লক্ষ্য এসএসসি ১৯৯৪ ও এইচএসসি ১৯৯৬ এর বন্ধুদের সবাইকে এক ছাতার নিচে যুক্ত করা। একসাথে পথচলা ও একে অন্যের সুখে দুঃখে পাশে দাঁড়ানো। সেই সাথে দেশের নাগরিক হিসেবে সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে পরিবর্তনের জন্য কাজ করতে চায়।

আইএনবি/ অ / সম্পাদনা-এমডি বাবুল ভূঁইয়া