মেয়ের আপত্তিকর ভিডিও ভাইরাল, লজ্জায় গৃহবধূর আত্মহত্যা

বরগুনা প্রতিনিধি: বরগুনার তালতলীতে মেয়ের আপত্তিকর ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়ায় লজ্জায় এক গৃহবধূ (৩৫) আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

গতকাল শনিবার রাতে মেয়ে ও তার বাবা থানায় হাজির হয়ে এ অভিযোগ করেন। এর আগে গত বৃহস্পতিবার বিকেলে ব্যাটারির অ্যাসিড পানি পান করে ‘আত্মহত্যা’ করেন ওই মা।

জানা যায়, উপজেলার তালতলীর সোনাকাটা ইউনিয়নের লাউপাড়া এলাকার আসাদুল হাওলাদার (২৫) একই এলাকার ৮ম শ্রেণি পড়ুয়া এক তরুণীকে (১৩) বিভিন্ন সময় উত্ত্যক্ত করে আসছিলেন। একসময় আসাদুল ওই মেয়েকে ভয়ভীতি দেখিয়ে তার সঙ্গে প্রেম করতে বাধ্য করেন। একপর্যায়ে তিনি গোপনে ওই মেয়ের সঙ্গে ভিডিও কলে কথা বলেন। ওই সময় মেয়ের নগ্ন ছবি রেকর্ড করে রাখেন আসাদুল।

এরপর গত ৮ মার্চ মেয়ের মাকে ওই ভিডিও দেখিয়ে ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন ওই যুবক। টাকা একদিনের মধ্যে না দিলে ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল করে দেওয়ার হুমকি দেন তিনি। পরে একদিন অতিবাহিত হয়ে গেলে টাকা না পেয়ে ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেন আসাদুল, যা মুহূর্তের মধ্যেই ভাইরাল হয়ে যায়।

এ ঘটনায় অপমানে বৃহস্পতিবার সকালে ব্যাটারির অ্যাসিড পানি পান করেন ওই গৃহবধূ। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী ছাত্রী বলেছে, ‘আসাদুল আমাকে প্রতিনিয়ত উত্ত্যক্ত করত। একসময় আমি তার সঙ্গে কথা বলি। পরে আমাকে ব্ল্যাকমেইল করে নগ্ন হয়ে ভিডিও কলে কথা বলতে বাধ্য করেন। পরে সেই ভিডিও রেকর্ড করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল করার হুমকি দিয়ে আমার মার কাছে ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন। টাকা না দেওয়ায় ভিডিওটি ভাইরাল করে দেন। এ লজ্জায় আমার মা আত্মহত্যা করেন।’

এ সময় ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করে ওই ছাত্রী আরও বলেছে, ‘বিচার না পেলে আমিও আত্মহত্যা করব।’

জানতে চাইলে আসাদুলের মা বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না। তবে আমার ছেলে যদি এ ঘটনা ঘটিয়ে থাকে তাহলে আমিও তার বিচার চাই।’

এ বিষয়ে তালতলী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী সাখাওয়াত হোসেন তপু বলেন, ‘এখনো কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ বিষয়ে বরিশাল কোতোয়ালি থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে।’

 

আইএনবি /বিভূঁইয়া