বড় বিনিয়োগ আর বাণিজ্য বাড়াতে আগ্রহী তুরস্ক

বাংলাদেশে প্রতিরক্ষা সামগ্ৰী বিক্রি, বড় বিনিয়োগ আর বাণিজ্য দুই বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করতে আগ্ৰহী তুরস্ক। ঢাকা সফররত তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত সাভাসগলু বুধবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে মোমেনের সঙ্গে বৈঠকের পর এ আগ্রহ ব্যক্ত করেন। বলেন, এ নিয়ে সরকার প্রধান ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে বিস্তৃত আলোচনা হয়েছে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত সাভাসুগ্লু বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এখন দক্ষিণ এশিয়ার উদীয়মান সূর্য। আর সব দেশের জন্য বাংলাদেশ আজ মডেল। এশিয়া আর ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে তুরস্কের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার বাংলাদেশ।

তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে স্বাস্থ্য, প্রতিরক্ষাসহ নানা খাতে বিপুল বিনিয়োগের সুযোগ আছে। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেনের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে।

মেভলুত সাভাসগলু বলেন, আমরা লক্ষ্য নির্ধারণ করেছি নিকট ভবিষ্যতে আমাদের বাণিজ্য ২ বিলিয়ন ডলার হবে, যা গত বছর ছিল প্রায় ১ বিলিয়ন। বাংলাদেশ বর্তমানে বিভিন্ন বৃহৎ প্রকল্প হাতে নিচ্ছে। তুরস্কের নির্মাণ প্রতিষ্ঠানগুলো পৃথিবীর মধ্যে অন্যতম এবং চীনের পরই তুরস্কের অবস্থান। এ খাতে আমরা একসঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী।

প্রতিরক্ষা খাতে সহযোগিতার বিষয়ে তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমাদের প্রতিরক্ষা পণ্যের গুনগত মান অত্যন্ত ভালো, দাম অত্যন্ত সুলভ এবং এগুলো কিনতে কোনো শর্ত আরোপ করা হয় না। আমি নিশ্চিত বাংলাদেশ এই সুবিধাগুলির সুযোগ নেবে।

প্রতিরক্ষা খাতে প্রযুক্তি হস্তান্তর ও যৌথ উৎপাদনে রাজি আছে তুরস্ক জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা সবকিছু তৈরি করি না তবে ৭৫ শতাংশের বেশি আমরা উৎপাদন করি। এর কারণ হচ্ছে, এর আগে যখন সমস্যা চলছিল, তখন আমাদের বন্ধুরাও আমাদেরকে প্রতিরক্ষা সামগ্রী সরবরাহ করেনি এবং সেজন্য আমরা বেশিরভাগ পণ্য নিজেরাই উৎপাদন করি। এ খাতে তুরস্ক অনেক বিনিয়োগ করেছে জানিয়ে তিনি বলেন, কয়েকটি দেশের সঙ্গে আমরা যৌথভাবে পণ্য উৎপাদন করছি।

রোহিঙ্গা বিষয়ে বাংলাদেশকে সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে জানিয়ে তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এ বিষয়ে যথেষ্ঠ করছে না। তিনি বলেন, আমরা শুধু কথা শুনতে চাই না, আমরা কাজেও তার প্রতিফলন দেখতে চাই। ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের স্থানান্তরের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বাংলাদেশের এ বিষয়ে জাতিসংঘ এবং আইওএম, ইউএনএইচসিআরসহ বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় করা উচিত।

অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেন, আমরা তুরস্কের সঙ্গে বাণিজ্য, কোভিড, বহুপক্ষীয় সম্পর্ক বাড়াতে আগ্রহী। আমরা তুরস্কের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত। গত সেপ্টেম্বরে আঙ্কারায় বাংলাদেশ দূতাবাসের নতুন ভবন উদ্বোধন হয়েছে এবং আজ ঢাকায় তুরস্কের নতুন দূতাবাস উদ্বোধন করা হবে বলে তিনি জানান।

উল্লেখ্য, বিকালে বারিধারায় নতুন দূতাবাস উদ্বোধন করবেন দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রী। আবদুল মোমেন জানান, সবার জন্য সুবিধাজনক সময়ে বঙ্গবন্ধু ও কামাল আতাতুর্কের আবক্ষ মূর্তি দু’দেশে উন্মোচন করা হবে। কোভিড পরিস্থিতির উন্নতি হলেই তুরস্কের প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশ সফরে আসবেন বলে আশা করে ঢাকা।