ফাঁড়ির সিসিটিভি ফুটেজ গায়েব করে এক সাংবাদিক ও এসআই

আইএনবি ডেস্ক: সিলেটের বন্দরবাজার ফাঁড়ির ইনচার্জ উপপরিদর্শক (সাময়িক বরখাস্ত) আকবর হোসেন ভূঁইয়া পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতন করে রায়হানকে (৩০) হত্যা করে। হত্যার পর লাপাত্তা হয়ে যান ফাঁড়ির ইনচার্জ। সেইসঙ্গে গায়েব করা হয় ফাঁড়ির সিসিটিভি ফুটেজ।

তবে পার্শ্ববর্তী পুলিশ সুপার (এসপি) কার্যালয়ের সিসি ক্যামেরার ফুটেজে একটি সিএনজি অটোরিকশায় রায়হানকে ফাঁড়িতে ধরে আনা ও নির্যাতনের পর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার প্রমাণ পাওয়া গেছে। এ প্রমাণ হস্তগত করে তদন্তকারী সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

ফাঁড়ি অভ্যন্তরে নির্যাতনের ঘটনার প্রমাণ মুছতে এসআই আকবরসহ তিনজনে মিলে গায়েব করেন সিটি ক্যামেরার ফুটেজ। অপর দু’জন হলেন- ফাঁড়ির টুআইসি এসআই হাসান উদ্দিন ও স্থানীয় সংবাদকর্মী আব্দুল্লাহ আল নোমান।

জানা য়ায়, এসআই আকবরের পালিয়ে যাওয়াসহ সিসি ক্যামেরার হার্ডডিস্ক গায়েবে সহায়তা করেন হাসান ও নোমান। এসআই আকবরের সোর্স ও ক্যাশিয়ার হিসেবে কাজ করতেন নোমান। তার বাড়ি কোম্পানিগঞ্জ উপজেলার বুরিডহর গ্রামে হলেও নগরের হাউজিং এস্টেটে ভাড়া থাকতেন। তার পরিবারের লোকজনকেও বাড়িতে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন।

এদিকে, পুলিশ সদর দফতরের তদন্ত কমিটি এসআই আকবরকে পলায়নে এসআই হাসানের সহায়তার প্রমাণ পায়। নির্যাতনের তথ্য গোপন ও এসআই আকবরকে পালাতে সহায়তা করায় বুধবার (২১ অক্টোবর) হাসানকে সাময়িক বরখাস্ত করে পুলিশ হেফাজতে নেওয়ার নির্দেশ দেন উপপুলিশ কমিশনার (উত্তর) আজবাহার আলীর শেখ।

বিভিন্ন হোটেল, হকার, যানবাহন, নিষিদ্ধ ব্যবসা থেকে এসআই আকবরের কালেকশন ম্যান ও সোর্স ছিলেন নোমান। তার ইশারাতেই এসআই আকবর বিভিন্ন লোকজনকে ধরে এনে ফাঁড়িতে নির্যাতন করে টাকা আদায় করতেন। এসআই আকবর ও এসআই হাসানের সঙ্গে নোমানের প্রায়ই আড্ডা হতো।

তদন্ত কমিটির তথ্যমতে, এসআই হাসান উদ্দিন ওই কাজে সহায়তা করেছেন। পাশাপাশি তিনি ঘটনার দিন নোমানের সঙ্গে ৪০ বার কথা বলেছেন। এরআগের দিন নোমানের সঙ্গে ফাঁড়ির টুআইসি এসআই হাসানের কথা হয় ১৯ বার।

সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (গণমাধ্যম) বিএম আশিরাফ উল্লাহ তাহের বলেন, আকবরকে পালাতে সহায়তা ও সিসিটিভি ফুটেজ গায়েবে সম্পৃক্ততা পাওয়ায় এসআই হাসান উদ্দিনকে সাময়িক বরখাস্ত করে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। তার বিষয়ে বাকি পদক্ষেপ নেবে পিবিআই।

গত রোববার (১১ অক্টোবর) ভোররাতে পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতন করে ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর রায়হানের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। এরপর আকবরসহ চার পুলিশকে বরখাস্ত ও তিন জনকে প্রত্যাহার করা হয়। ঘটনার পর রবিবার থেকে আকবর পলাতক রয়েছেন।

আইএনবি/বি.ভূঁইয়া