‘পিস্তল’ ঠেকিয়ে র‌্যাব সদস্যকে গুলির হুমকি

রাজশাহী প্রতিনিধি: রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলায় মাদকবিরোধী অভিযানে এক মাদক কারবারি র‌্যাব সদস্যের মাথায় খেলনা পিস্তল ঠেকিয়ে গুলি করার হুমকি দিয়েছেন । এ সময় চাপাতি দিয়ে আঘাত করেছেন অপর মাদক কারবারি। এতে আহত হয়েছেন ওই র‌্যাব সদস্য।

গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় উপজেলার বিজয়নগর গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। এ সময় ১৭৭ বোতল ফেনসিডিলসহ তিনজনকে আটক করেছে র‌্যাব। পরে র‌্যাবের করা মামলায় তিনজনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা হলেন, গোদাগাড়ী পৌরসভার মাদারপুর ডিম ভাঙা মহল্লার শাহরিয়ার নাজিম ওরফে জয় (২১), বুজরুক রাজারামপুর হলের মোড় এলাকার পরশ ওরফে মাহিদ হাসান (১৯) ও সিঅ্যান্ডবি গড়ের মাঠ এলাকার তারেক মাহফুজ (১৯)।

গোদাগাড়ী থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, শাহরিয়ারের মা আমেনা বেগম ওরফে মুক্তি একজন চিহ্নিত মাদক কারবারি। তার প্রথম স্বামী শহিদুল ইসলামের ছেলে শাহরিয়ার। মাদক ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ায় আমেনা বেগমের সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদ হয় শহিদুলের। পরে মতিউর রহমান নামে গোদাগাড়ীর এক মাদক কারবারিকে বিয়ে করেন আমেনা। মতি র‌্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হন। এরপর গোদাগাড়ী পৌর যুবলীগের নেতা নুরুজ্জামান ওরফে কাজলকে বিয়ে করেন আমেনা। কিছুদিন আগে একটি মাদক মামলায় নুরুজ্জামান, আমেনা ও তার ছেলে শাহরিয়ারকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠায় পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। সম্প্রতি তারা জামিনে বের হন। তারপর আবার র‌্যাবের কাছে মাদকসহ গ্রেপ্তার হলেন শাহরিয়ার।

র‌্যাব জানায়, ফেনসিডিল বিক্রির জন্য মাদক কারবারিরা অপেক্ষা করছেন, এমন সংবাদের ভিত্তিতে র‌্যাব-৫ এর রাজশাহীর মোল্লাপাড়া ক্যাম্পের স্কোয়াড কমান্ডার ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মারুফ হোসেন খানের নেতৃত্বে র‌্যাবের একটি দল বিজয়নগর গ্রামে অভিযান যায়। তখন চারজন দুটি বস্তা ফেলে পালানোর চেষ্টা করেন। র‌্যাব সদস্যরা তাদের চারদিক থেকে ঘিরে ফেললে পরশ তার হাতে থাকা ধারালো চাপাতি দিয়ে কনস্টেবল রোকনুজ্জামানের মাথায় আঘাতের চেষ্টা করেন। তা প্রতিহত করতে গেলে রোকনুজ্জামানের একটি আঙুল কেটে জখম হয়। আর শাহরিয়ার তার কোমর থেকে একটি খেলনা পিস্তল বের করে এক র‌্যাব সদস্যের মাথায় ধরে বলেন, ‘গুলি করে দেব’। এভাবে তারা ভয় দেখিয়ে পালানোর চেষ্টা করলেও র‌্যাব সদস্যরা তিনজনকে ধরে ফেলেন। একজন পালিয়ে যান। আহত র‌্যাব সদস্য রোকনুজ্জামান গোদাগাড়ী ৩১ শয্যা হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।

এ ঘটনায় র‌্যাবে কর্মরত উপপরিদর্শক ত্রিনিবাস মিস্ত্রি বাদী হয়ে গোদাগাড়ী থানায় চারজনের নামে একটি মামলা করেছেন। মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে মাদক রাখা, সরকারি কাজে বাধা দান ও র‌্যাব সদস্যদের ওপর হামলার অভিযোগ আনা হয়েছে। গ্রেপ্তার তিন আসামিকেও গোদাগাড়ী থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

এ বিষয়ে র‌্যাব-৫ এর ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মারুফ হোসেন খান বলেন, খেলনা পিস্তলটি হাতে না নিলে বোঝার উপায় নেই। এটি দিয়েই মাদক কারবারিকে হয়তো মানুষকে জিম্মি করেছে। পিস্তলটি হাতে নেওয়ার পর তিনি বুঝতে পেরেছেন সেটি খেলনা পিস্তল।

 

আইএনবি/বিভূঁইয়া