পারিবারিক বিচ্ছেদ কেন হয়…? পর্ব-২

সমসাময়ীক গল্প অবলম্বনে

এমডি বাবুল ভূঁইয়া: সম্প্রতি বেড়েছে বিবাহ বিচ্ছেদের ঘটনা। বেশিরভাগ নারীর সংসার ভাঙার পেছনে রয়েছে নানাবিধ কারণ।

স্বামীকে খুশি করার জন্য যত কিছুই করুক না কেন। প্রথমে জানতে হবে আপনার প্রিয় মানুষটি আসলে আপনার কোন আচারণে কষ্ট পায়। আর কোন আচারণে খুশি হয়।

পছন্দের সাজসজ্জা, সুন্দর পোশাক, আন্তরিক নানান আচরণ আরও কত কী। তবুও সম্পর্ক ভাঙে, ভালোবাসার দিনগুলো হয়ে যায় অতীত।

নারীদের কিছু আচারণ আছে যা কোনো পুরুষই পছন্দ করে উঠতে পারেন না।

পুরুষের অপছন্দের তালিকার শীর্ষে আছে তাদের পরিবারকে অসম্মান এবং স্বামীর কথাকে গুরুত্ব না দেওয়া এবং কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় স্বামীর সাথে পরামর্শ না করা। অনেক মেয়েই নিজের পরিবারকে অর্থ্যাৎ বাবার বাড়িকে প্রাধান্য দিয়ে থাকে কিন্তু স্বামীর পরিবারকে অবহেলা করে যা পুরুষরা কোনভাবেই মেনে নিতে পারেন না। নিজের পরিবারকে অসম্মান ও অপছন্দ করা সকল পুরুষদেরই খুব অপছন্দ।

বিয়ের অর্থ বাকি জীবনটা সুখে-শান্তিতে কাটিয়ে দেওয়া। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে তা হয় না। বরং সময় যত এগিয়ে যাচ্ছে, সংসার ভাঙার হার তত বাড়ছে। বিশেষজ্ঞরা এ অবস্থার কারণ চিহ্নিতের জন্যে নানা গবেষণা চালিয়েছেন। তবে কিছু কারণকে মৌলিক কারণ হিসেবে তুলে ধরেন বহু বিশেষজ্ঞ। এমনই কিছু কারণ যা একটি দাম্পত্য জীবনে বিচ্ছেদ ঘটাতে চাবিকাঠির কাজ করে।

১. অর্থনৈতিক অবস্থা : দুজনের মাঝে সম্পর্ক যত গভীরই হোক না কেন, অর্থনৈতিক অবস্থার ভারসাম্য না থাকলে সমস্যা হবে বলেই মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। প্রতিটি সম্পর্কই কোনো না কোনোভাবে শেষ পর্যন্ত অর্থনৈতিক অবস্থার দ্বারা নির্ধারিত হয়। কোনো যুক্তি বা বাস্তবতা দিয়ে সম্পর্কের মধ্য থেকে অর্থনৈতিক বিষয়টিকে উড়িয়ে দেওয়া সম্ভব নয়।

২. যোগাযোগে বিচ্ছিন্নতা : যোগাযোগ না থাকায় দুজনের মধ্যে হয়তো ঝামেলা হচ্ছে না, কিন্তু আপনারা যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন। কথা না বলা বা যোগাযোগ না হওয়াই যথেষ্ট। এ ধরনের পরিস্থিতি বোঝায় যে, দুজনই আর বোঝাপড়ার বিষয় আগ্রহী ন। এই পরিস্থিতির পরবর্তী পদক্ষেপে সাধারণত ডিভোর্স নিতে দেখা যায় দম্পতিদের।

৩. ঘৃণা-অবজ্ঞা : দুজনের মাঝে বোঝাপড়া না থাকলে ঘৃণা-অবজ্ঞার মতো বিষয় সৃষ্টি হতে পারে। স্বাস্থ্যকর সম্পর্ক নষ্টের পেছনে ঘৃণা-অবজ্ঞার মতো কার্যকর বিষয় আর নেই। বিয়ে এবং যৌনবিষয়ক থেরাপিস্ট ড. কাট ভ্যান কির্ক বলেন, দুজনের প্রতি দুজনের বিন্দুমাত্র আবেগ কাজ না করার অর্থ এখানে ঘৃণার আগমণ ঘটেছে। আর তা সম্পর্ক শেষের লক্ষণ।

৪. সম্পর্ককে বিচ্ছিন্নভাবে লালন করা : হয়তো দুজন সংসার পেতেছেন, কিন্তু এর যত্নআত্তি করলে যার যার মতো করে। এতে দুজনের মধ্যে ধীরে ধীরে দুই ধরনের মানসিকতা তৈরি হবে। দুজনের ব্যবহার দুই ধরনের হতে শুরু করবে। খুব দ্রুত টানাপড়েন শুরু হবে। একই বিষয়ে দুজনের দুই ধরনের মতামত সৃষ্টি হবে।

৫. মিথ্যাচার : এটা খুবই মারাত্মক বিষয়। একের বিষয়ে অন্যের বিশ্বস্ততা নষ্ট হয় মিথ্যাচারের কারণে। প্রত্যেকের দ্বৈত জীবন সংসারকে ধ্বংস করবে। সততা ও স্বচ্ছতার মাধ্যমে সম্পর্কের লালন করতে হয়। বিশ্বাস ভঙ্গ হলে সম্পর্কের ভিত্তি নষ্ট হয়।

৬. অন্তরঙ্গতার অভাব : দুজনের মধ্যে শুধু মানসিক বন্ধন থাকলেই চলবে না, দৈহিক অন্তরঙ্গতাও থাকতে হবে। স্পর্শ, জড়িয়ে ধরা, হাত ধরা ইত্যাদি দুজনের মধ্যে সম্পর্ককে অনেক গভীর করে তুলতে পারে।

৭. বিশেষজ্ঞরা বলছেন , সংসার ভাঙ্গার সবচেয়ে ভয়াবহ রুপ দারুন করে মেয়ের পরিবার যখন মেয়ের কোন অভিযোগ বা তার কথাকে সত্য-মিথ্যা যাচাই না করে প্রাধান্য দিয়ে মেয়ের জামাতার পরিবার কিংবা জামাতার সঙ্গে অসদাচর আচরণ করেন। তারা কখনো নিজ মেয়েকে শাসন না করে অপরাধের আঙ্গুল তোলেন মেয়ের জামাইর পরিবার ও জামাতার বিরুদ্ধে।

আইএনবি