পড়া না পারায় ছাত্রকে পিটিয়ে হাত ভেঙে দিল মাদরাসা শিক্ষক

বরগুনা প্রতিনিধি: বরগুনার আমতলীতে দারুল আরকাম মডেল মাদরাসায় অধ্যয়নরত নুরানী শাখার আবদুল্লাহ (৬) নামে এক  ছাত্রকে পড়া না পারায় মাদরাসা শিক্ষক পিটিয়ে হাত ভেঙে দিয়েছে এবং গত ৪ দিন ধরে কোনো চিকিৎসা না দিয়ে মাদরাসায় আটকে রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

জানা গেছে, উপজেলার চাওড়া ইউনিয়নের চাওড়া গ্রামের হারুন অর রশিদ হাওলাদারের শিশুপুত্র মো. আবদুল্লাহকে ওই মাদরাসায় নুরানী (অবাসিক) শাখায় ভর্তি করেন। গত ২২ দিন আগে তার মা পারুল বেগম ছেলের সঙ্গে মাদরাসায় এসে দেখে করে যান।

এরপর গত ৯ ডিসেম্বর বিকেলে মাদরাসার নুরানী শাখার ক্লাস নেয় শিক্ষক হাফেজ মাওলানা আবু আক্কাস আলী। ক্লাসে পড়া না পাড়ায় ছাত্র আবদুল্লাকে প্রথমে লাঠি দিয়ে পেটান ওই অভিযুক্ত শিক্ষক। লাঠি দিয়ে পেটানোর সময় শিশু আবদুল্লাহ চিৎকার করে কান্না শুরু করলে এতে ক্ষিপ্ত হন ওই মাদরাসা শিক্ষক। এসময় তিনি আবদুল্লাহকে ডাস্টার দিয়ে পিটিয়ে বাম হাতের জোরা ছুটিয়ে ফেলেন। এ অবস্থায় আবদুল্লাহকে কোনো প্রকার চিকিৎসা এবং তার অভিভাবককে না জানিয়ে গত চার দিন ধরে মাদরাসার একটি কক্ষে ছাত্রকে আটকে রাখেন ওই অভিযুক্ত শিক্ষক। গত চার দিন ধরে আবদুল্লাহ হাতের প্রচণ্ড যন্ত্রণায় কাতরালেও শিক্ষক তার কোনো চিকিৎসা এবং খোঁজ নেননি।

সোমবার (১৩ ডিসেম্বর) সকালে আবদুল্লাহর মা ছেলেকে দেখতে মাদরাসায় আসলে ছেলেটি কান্না শুরু করে দেয় এবং তার হাত ব্যথায় নারাতে পারছে না বলে মাকে জানায়।

মা তখন নিরুপায় হয়ে ছেলেকে তাৎক্ষণিক আমতলী হাসপাতালের জরুরী বিভাগে নিয়ে যান। সেখানে তার হাতের এক্সরে করে দেখা যায় বাম হাতের জয়েন্ট সরে গেছে।

শিশু আবদুল্লাহ জানায়, পড়া না পাড়ায় হুজুর আমারে পিডাইয়া হাত ভাইঙ্গা দিছে। এরপর আমারে কোনো ওষুধ খাওয়ায় নাই। বাড়িতেও যাইতে দেয় নাই।

হাসপাতালের জরুরী বিভাগের মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট মো. মোস্তাফিজুর রহমান জানায়, প্রচণ্ড আঘাতের কারণে ছেলেটির বাম হাতের জয়েন্ট সরে গেছে। হাতে ব্যান্ডেজ করে দেওয়া হয়েছে।

এ ব‍িষয়ে ওই মাদরাসার অভিযুক্ত শিক্ষক হাফেজ মাওলানা আবু আক্কাস আলী বলেন, পড়া না পাড়ায় সামান্য ২/১টি চর থাপ্পড় দিয়েছি। ডাস্টার দিয়ে হাত ভাঙার কথা তিনি অস্বীকার করেন। মারধরের পর গত চার দিন আটকে রাখার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি তার কোনো উত্তর দেয়নি।

আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এ কে এম মিজানুর রহমান মুঠোফোনে বলেন, হাত ভাঙা বাচ্চাসহ একজন মহিলা থানায় এসেছিল। মৌখিকভাবে সে মাদরাসা শিক্ষকের বিরুদ্ধে তার ছেলেকে পিটিয়ে হাত ভাঙার বিষয়ে জানিয়েছে।

 

আইএনবি/বিভূঁইয়া