ধর্ষণে অন্তঃসত্ত্বা তরুণীকে মারধর, গ্রেপ্তার ৩

নোয়াখালী প্রতিনিধি: নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে ধর্ষণে অন্তঃসত্ত্বা তরুণীকে (২২) মারধরের ঘটনায় মামলার ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ইউপি সদস্যের তিন ছেলেকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব-১১। গতকাল শনিবার সদর ও বেগমগঞ্জ উপজেলা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে র‌্যাব-১১ সদস্যরা।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- বেগমগঞ্জ উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নের সংরক্ষিত নারী সদস্য মোমেনার তিন ছেলে রোমান (৩৫), রানা (৩২) ও রুবেল (৪০)।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, হাজীপুর ইউনিয়নের সংরক্ষিত নারী সদস্য মোমেনার ছেলে রোমান গত রোজার ঈদের পর থেকে ভয়ভীতি দেখিয়ে ওই তরুণীকে ধর্ষণ করে। পারিবারিক সমস্যা থাকায় প্রায় সময় মা-বাবা ও বড় ভাই বাড়ির বাইরে থাকতো। বাড়িতে ছোট তিন ভাইকে নিয়ে থাকত ওই তরুণী। গত রমজানের ঈদের পর থেকে ভয় দেখিয়ে প্রায় রাতে ভুক্তভোগীর শয়নকক্ষে ঢুকে তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে আসছিল রোমান। এ ঘটনার ১ মাস পর নির্যাতিতার মা বাড়িতে আসলে বিষয়টি তাকে অবগত করা হয়।

পরবর্তী সময়ে বিষয়টি স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও অভিযুক্ত রোমানের পরিবারকে জানান ওই ভুক্তভোগীর মা। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওই তরুণীর পরিবারের সদস্যদের কয়েক দফায় মারধর করেন রোমান ও তার পরিবারের লোকজন। এদিকে ভুক্তভোগী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন। এরপর রোমানকে বিয়ের জন্য বলা হয়। কিন্তু বিয়েতে অস্বীকৃতি জানিয়ে ভুক্তভোগী ও পরিবারের লোকদের বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে বলে এবং থানায় কোনো অভিযোগ দিলে হত্যার হুমকি দেয়।

গত বুধবার বিকেলে বাড়ির পাশের পুকুরঘাটে কাজ করছিলেন ওই তরুণী। এ সময় রোমান ও তার ভাই রুবেল এসে তাকে এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি মেরে আহত করে ফেলে যান। পরে বাড়ির লোকজন আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। ওই রাতে ভুক্তভোগী বাদী হয়ে বেগমগঞ্জ মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।

জানা যায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃতরা ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছেন। তারা এলাকায় মারামারি, দাঙ্গা-হাঙ্গামাসহ বিভিন্ন অপকর্মের সঙ্গে জড়িত। তাদের ভয়ে এলাকার কেউ মুখ খুলতে সাহস পেত না। আসামি রোমান, রুবেল ও রানার বিরুদ্ধে বেগমগঞ্জ থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।

এ ছাড়াও এই মামলার অন্যতম আসামি মো. রুবেল বেগমগঞ্জ থানার চিহ্নিত সন্ত্রাসী আমজাদ হোসেন ওরফে পেট কাটা সুমন ওরফে খালাসি সুমন বাহিনীর সক্রিয় সদস্য। তার বিরুদ্ধে দস্যুতা, খুনসহ ডাকাতি এবং একাধিক মারামারির মামলা আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে র‌্যাব-১১, সিপিসি-৩, নোয়াখালী ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার মাহমুদুল হাসান বলেন, গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বেগমগঞ্জ মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

আইএনবি/বিভূঁইয়া