ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পেশাগত দায়িত্ব পালনে হুমকি তৈরি করছে

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন দিয়ে গণমাধ্যম ও মতপ্রকাশের ক্ষেত্রে আতঙ্ক তৈরি করা হচ্ছে। আইনটি সাংবাদিকদের পেশাগত দায়িত্ব পালনে হুমকি সৃষ্টি করছে। অন্যায়ের ঢাল হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে এ আইন। সরকারের পক্ষ থেকে বারবার আশ্বাস দেওয়ার পরও সাংবাদিকদের হয়রানি করা হচ্ছে।

আজ শুক্রবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে সার্ক ফোয়ারা মোড়ে ‘আমরা গণমাধ্যমকর্মী’ আয়োজিত এক মানববন্ধনে এসব কথা বলা হয়। আরটিভির সাংবাদিক অধরা ইয়াসমিনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলার প্রতিবাদে এ মানববন্ধন হয়।

রাজারবাগ দরবার শরিফ ও এর নেতা শাকেরুল কবিরের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড নিয়ে প্রতিবেদন প্রচারের পর চট্টগ্রামের সাইবার ট্রাইব্যুনালে অধরা ইয়াসমিন ও তাঁর সোর্সের বিরুদ্ধে মামলা হয়।

মানববন্ধনে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সভাপতি সোহেল হায়দার চৌধুরী বলেন, ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে মুলা ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। দু্ইজন মন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছিলেন, কোথাও যদি সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলা হয়, তাহলে তিনি সেই মামলা পরিচালনা করবেন। কিন্তু আজ পর্যন্ত একটি মামলাও তাঁকে পরিচালনা করতে দেখিনি।

 

সাংবাদিকদের সব সময় নিপীড়ন–নির্যাতনের শিকার হতে হচ্ছে উল্লেখ করে সোহেল হায়দার বলেন, আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে সংশোধনের কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু সংশোধনের জন্য অংশীজনদের কাউকে ডাকা হয়েছে কি না, সে প্রশ্ন তুলে অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা করে আইনটি সংশোধনের জন্য আহ্বান জানান তিনি।

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সভাপতি মোরসালিন নোমানী জানান, রাজারবাগের পীর ধারাবাহিকভাবে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে যাচ্ছেন। এ পর্যন্ত অন্তত ১০ জন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে তিনি মামলা করেছেন। এই পীরের ব্যাপারে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছেও স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছিল। তিনি সাংবাদিকদের অনুরোধ করেন অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার মধ্যে এই পীরের অপকর্ম তুলে ধরতে।

মানববন্ধনে বক্তারা সাংবাদিকদের হয়রানিমূলক সব কালাকানুন বাতিল ও অধরা ইয়াসমিনের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান। এ ছাড়া বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সাংবাদিক ও মতপ্রকাশের জন্য আতঙ্ক। অন্যায়ের ঢাল হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন।

রাজারবাগের পীর ও তাঁর মুরিদদের নানা অপকর্মের সংবাদ সামনে এলেও তাঁদের কেন গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না এবং প্রশাসন কেন তাঁর ব্যাপারে নীরব, সে প্রশ্ন তোলা হয় মানববন্ধনে। পাশাপাশি শেষ পর্যন্ত অধরা ইয়াসমিনের পাশে থাকার জন্য আরটিভির প্রতি আহ্বান জানানো হয়।

ডিইউজের সাধারণ সম্পাদক আকতার হোসেনের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে আরও বক্তব্য দেন ঢাকা সাব-এডিটরস কাউন্সিলের সাবেক সভাপতি নাসিমা আক্তার সোমা, ডিআরইউর সাবেক সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম হাসিব, ল রিপোর্টার্স ফোরামের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাবেদ, রিপোর্টার্স অ্যাগেইনস্ট করাপশন (র‌্যাক), আরটিভি, বাংলাভিশনসহ বিভিন্ন সংগঠন ও গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানের সাংবাদিকেরা।

এনএ/জেডএইচ