খালেদা জিয়ার দাফন পর্যন্ত গণভোটের প্রচার বন্ধ রাখার নির্দেশনা

আইএনবি ডেস্ক: বিএনপির চেয়ারপারসন ও তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার প্রয়াণে তার প্রতি সম্মান জানিয়ে দেশব্যাপী চলমান গণভোটের সব ধরণের প্রচার কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) গণভোট বিষয়ক জনসচেতনতামূলক প্রচার কার্যক্রমের মুখ্য সমন্বয়ক এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক আলী রীয়াজ এই সিদ্ধান্তের কথা নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান যে, বেগম খালেদা জিয়ার জানাজা ও দাফন প্রক্রিয়া সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত সরকারিভাবে পরিচালিত গণভোটের কোনো প্রচারণা চালানো হবে না।

আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি জাতীয় নির্বাচনের দিন একই সাথে ‘জুলাই সনদ’ বিষয়ে গণভোট অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে এবং জনগণকে উদ্বুদ্ধ করতে সরকার দেশজুড়ে যে ব্যাপক প্রচার শুরু করেছিল, শোকের এই মুহূর্তে তা স্থগিত করা হলো।

অধ্যাপক আলী রীয়াজ আজকের পত্রিকাকে দেওয়া এক বক্তব্যে স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন যে, বেগম খালেদা জিয়ার বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবন ও দেশের জন্য তার ত্যাগের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতেই এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। বর্তমানে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়সহ ১৯টি মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ে যে প্রচার কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছিল, তা আপাতত বন্ধ থাকবে।

উল্লেখ্য, জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় আনুষ্ঠানিকভাবে ‘সুপার ক্যারাভান’ বা ভ্রাম্যমাণ প্রচার কার্যক্রমের যাত্রার মাধ্যমে এই অভিযানের সূচনা হয়েছিল। তবে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর প্রয়াণে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রীয় শোক ও জনগণের আবেগের কথা বিবেচনা করে প্রচার কার্যক্রম স্থগিত রাখার এই ঘোষণা এল।

দীর্ঘদিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর আজ মঙ্গলবার ভোরে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। তার মৃত্যুর সংবাদ পাওয়ার পরপরই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ জরুরি বৈঠকে বসেছে।

প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই বিশেষ বৈঠকে বেগম জিয়ার শেষ বিদায়ে রাষ্ট্রীয় কর্মসূচি ও সম্মানের বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা চলছে। ধারণা করা হচ্ছে, আজ দুপুর ১২টার পর জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা রাষ্ট্রীয় শোক দিবস পালনসহ অন্যান্য আনুষ্ঠানিক কর্মসূচি ঘোষণা করবেন।

বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে রাজনৈতিক অঙ্গনে গভীর শোকের ছায়া নেমে এসেছে। বিএনপি নেত্রীর জানাজা ও দাফন কোথায় এবং কখন অনুষ্ঠিত হবে, তা জানতে তার পরিবারের সদস্য ও দলীয় নীতি-নির্ধারকদের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছে দেশবাসী।

সরকার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, এই শোকের সময়ে রাষ্ট্রীয় সব ধরণের জাঁকজমকপূর্ণ প্রচার ও আনন্দঘন আয়োজন এড়িয়ে চলা হবে। জুলাই সনদের ওপর অনুষ্ঠেয় গণভোটের প্রচারণা পুনরায় কবে থেকে শুরু হবে, তা দাফন পরবর্তী পরিস্থিতি বিবেচনা করে সরকার যথাসময়ে জানিয়ে দেবে।

আইএনবি/বিভূঁইয়া