কন্যা শিশু আর্শীবাদ: জাতীয় কন্যা শিশু দিবস

  1. আইএনবি ডেস্ক : ‘আমরা কন্যা শিশু, প্রযুক্তিতে হবো সমৃদ্ধ, ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়বো’। এই প্রতিপাদ্য সামনে রেখে এবার ২০২১ সালের জাতীয় কন্যা শিশু দিবস পালিত হচ্ছে।

 

২০২০ সালে এ দিবসের প্রতিপাদ্য ছিল ‘আমরা সবাই সোচ্চার, বিশ্ব হবে সমতার’।

২০১৯ সালে ছিল, ‘কন্যা শিশুর অগ্রযাত্রা, দেশের জন্য নতুন মাত্রা’।

২০১৮ সালে ছিল, ‘থাকবে কন্যা সুরক্ষিত দেশ হবে আলোকিত,।

২০১৭ সালে এ দিবসের প্রতিপাদ্য বিষয় ছিল, ‘কন্যা শিশুর জাগরণ আনবে দেশের উন্নয়ন,।

 

বিধাতার নিকট কৃতজ্ঞ।

প্রার্থনা তোমার জন্য প্রিন্সেস সামীহা নূর জারা

মেধা মনন আর শিষ্টতায় তুমি হও সেরাদের সেরা।

আজ সকল পিতা মাতার এই হউক দৃপ্ত অঙ্গীকার

পূর্ণ করে দিবো তোমাদের সকল চাওয়া,জন্মগত অধিকার।

 

হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলনে, রাসুল (সা.) ইরশাদ করনে, ‘যার ঘরে কন্যা সন্তান জন্মগ্রহণ করলো, অতঃপর সে ওই কন্যাকে কষ্ট দেয়নি, মেয়ের উপর অসন্তুষ্টও হয়নি এবং পুত্র সন্তানকে তার ওপর প্রধান্য দেয়নি, তাহলে ওই কন্যার কারণে আল্লাহ তাআলা তাকে জান্নাতে প্রবশে করাবেন। ’ (মুসনাদ আহমদ, হাদিস নং: ১/২২৩)

 

কন্যার মুখে আব্বু ডাক শুনার একী আনন্দ!

আমার স্ত্রী বলেন,”পৃথিবীতে মাতৃত্বের মত মধুর অনুভূতি দ্বিতীয়টি নেই”।আমার কাছে পিতা না হতে পারার বেদনা হিমালয় আল্পসের জমাট বাঁধা বরফ সম।যা কখনো গলে শেষ হবার নয়।আমাদের দাম্পত্য জীবনের স্নেহাস্পদ সামীহা নূর জারা’র মুখে আব্বু ডাক শুনার আনন্দানুভূতি সাতসাগর ঊর্মিমুখর।আকাশে প্রতি রাতে চাদ তার মাধবী রূপ নিয়ে হাজির হয়না কিন্তু আমার ঘরে প্রতি রাতে মায়াবী চাদের জোছনা উপচে পড়ে।মেঘে ঢাকা আকাশ কিংবা সূর্যগ্রহণ আমার ঘরের ঝলমলে দিনের আলোকে ম্লান করতে পারেনা। দীর্ঘ দিন চীনের হোবে প্রদেশে একটি কিন্ডারগার্টেন স্কুলের কোমলমনা বাচ্চাদের হইহুল্লোড় খুব কাছ থেকে দেখেছি।স্কুল গেইটে রেখে যাওয়া ছোট্ট বেবিটির সাথে মা কিংবা বাবার বিদায় আলিঙ্গন আমাকে গভীর আবেগাপ্লুত করত। পিতৃত্বের হাহাকার বালুকাময় জীবনের তীরে কখনো কখনো ঢেউয়ের মত আছড়ে পড়ত।পৃথিবীর অবাক শহর বৈরুতের কসমো সেন্টারে আন্ডা বাচ্চাদের খেলা উপভোগ করেছি।

 

মাঝেমধ্যে মনে হত আহা! আমার যদি এমন ফুটফুটে একটা বেবী থাকত!

সাইপ্রাসীয় মাই মলের কিডস জোনে আহ্লাদিত সোনামণিদের নানান রঙের খেলনার সাথে পরিচিত হয়েছি।সিঙ্গাপুরের চিল্ড্রেন হেভেনে সুন্দর সব কিডস টয়েস দেখে আহত হয়েছি।জাপানে চারতলা বিশিষ্ট চিলড্রেন্স টয় মার্কেট Hakuhinkan Toy Store ও Hakuhinkan Toy Park ভাবিয়েছে ঢের। জানি অনেক রাইড আর টয়েস আছে যা কিনা কোম্পানি আমার বেবীর জন্য তৈয়ার করেনি কিংবা ক্রয় করার ইচ্ছেও আমার নেই।অথবা আমার মানিব্যাগে সেই পরিমাণ ডলার কখনো রাখা হয়না।ইটস ডাজ নট এ মেটার। কি মালয়শিয়ার মাইডিন,তুরস্কের তারসুস,সিঙ্গাপুর সিটি যখন যেখানে গিয়েছি বুড়ো আর শিশুদের সাথে পেতেছি মিতালী।

 

আজ কিংবা এখনও যমুনা ফিউচার পার্কের কিডস প্যারাডাইস কিংবা ল্যাভেন্ডারের কিডস জোন কাজের ফাকে,অবসরে আমাকে ডাকে।মন চায় সবগুলো খেলনা কিনে ফেলি মেয়ের জন্য। এটা সেটা কেনাকাটা করলেও মনভরে না।যদি প্রশ্ন করা হয় পৃথিবীতে পিতা মাতা অর্থাৎ এডাল্ট মানুষজনের নিকট শ্রেষ্ঠ খেলনা সামগ্রী কি?আমি বলব নিজ শিশু সন্তান বা যেকোন শিশু বাচ্চা।কারণ,আমার সন্তানকে খেলনার ঝুড়ি আর পুতুল দিয়ে বলি,”সামীহা এই পুতুলগুলো হচ্ছে তোমার খেলার পুতুল আর তুমি হলে বাবার খেলার পুতুল।এসো আমরা খেলা করি।তখন মেয়ে আমার আনন্দে নিজের মত করে ঝর্নার মত নানান শব্দ ছড়ায়।বাবা মেয়ের এ খেলা কখনো শেষ হতো না যদিনা মেয়ের চোঁখে কিংবা বাবার চোঁখে ঘুম না আসতো। মেয়ের পেটে ক্ষুধা না পেত। অথবা বাবার অফিস না থাকতো………

 

শিশু অধিকার রক্ষাকল্পে ১৯৫৪ সালে জাতিসংঘ কর্তৃক এক প্রস্তাবে বিশ্বব্যাপী প্রতিবছর একদিন ‘শিশু দিবস’ পালনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয় | ফলে প্রতিবছর ২৯ সেপ্টেম্বর ‘শিশু অধিকার দিবস’ পালিত হয়ে আসছে | কন্যা শিশুর প্রতি বৈষম্য রোধেকন্যা শিশুর যথাযথ শিক্ষা, পুষ্টি, নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ তথা সুষ্ঠু বিকাশকে সামনে রেখেই “জাতীয় কন্যা শিশু দিবস’’ পালন শুরু হয়। ইভটিজিং, এসিড সহিংসতা এবং যৌন নির্যাতনসহ কন্যা শিশুর প্রতি সকল প্রকার সহিংসতা বন্ধে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলাই ছিল লক্ষ্য। জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রসমূহে ২০১২ সাল থেকে প্রতিবছরের ১১ অক্টোবর পালিত হয় আন্তর্জাতিক কন্যা শিশু দিবস। এদিকে প্রতিবছরের ২৯ সেপ্টেম্বর থেকে ৫ অক্টোবর পর্যন্ত আন্তর্জাতিক শিশু সপ্তাহ পালন করা হয়। এই শিশু সপ্তাহের দ্বিতীয় দিন, অর্থাৎ ৩০ সেপ্টেম্বর পালন করা হয় জাতীয় কন্যা শিশু দিবস হিসাবে। আজ বৃহস্পতিবার, ৩০ সেপ্টেম্বর জাতীয় কন্যাশিশু দিবস |

 

হে আল্লাহ আমাদের সকলকে চক্ষু শীতলকারী নেক সন্তান দান করুন।আমিন।ছুম্মামিন।

 

লেখক: এস এম শাহনূর

কবি ও আঞ্চলিক ইতিহাস গবেষক।

 

আইএনবি/বিভূঁইয়া