ঋণের চাপে বিষপান দম্পতির মৃত্যু

নাটোর প্রতিনিধি: নাটোরের বড়াইগ্রামে গতকাল শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে উপজেলার বনপাড়া পৌরসভার হালদারপাড়া এলাকার ভাড়া বাসায় ঋণ ও সুদের চাপে দিশেহারা এক দম্পতি একসঙ্গে ইঁদুর মারার গ্যাস ট্যাবলেট খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। এ ঘটনায় ১২ ঘণ্টার ব্যবধানে বিথী খাতুন (২৪) ও ফারুক হোসেন (৩৫) নামের ওই দম্পতি মারা যান।

জানা গেছে, বিষ খাওয়ার পর হাসপাতালে নেওয়ার পথে বেলা ১১টার দিকে স্ত্রী বিথী খাতুন মারা যান। আর ফারুক হোসেন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার রাত ১১টার দিকে মারা যান। তিনি বনপাড়া কালিকাপুর মহল্লার ফল ব্যবসায়ী মফিজ উদ্দিনের ছেলে এবং পেশায় ফল ব্যবসায়ী।

পরিবার সূত্র জানায়, বিথী খাতুন ফারুকের দ্বিতীয় স্ত্রী। তারা ভালোবেসে বিয়ে করেন। ব্যবসা সূত্রে ফারুক বিভিন্ন সমিতি ও সুদি মহাজনদের কাছ থেকে ১০ লক্ষাধিক টাকা চড়া সুদে ঋণ নেন। এই টাকা পরিশোধ নিয়ে তারা দুশ্চিন্তায় পড়ে যান। এতে ফারুক তার স্ত্রীকে বিষ খেয়ে মারা যাওয়ার কথা জানান। তার কথায় সায় দেয় স্ত্রীও।

এক পর্যায়ে ফারুক গ্যাস ট্যাবলেট খাওয়ার পর তার স্ত্রী বিথীও খায়। পরে পরিবারের লোকজন বিষয়টি টের পেলে তাদেরকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে বিথীর মৃত্যু হয়। আর আশঙ্কাজনক অবস্থায় ফারুককে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে আইসিইউ-তে চিকিৎসা ব্যয় মেটাতে সক্ষম না হলে রাত ৯টার দিকে তাকে ফিরিয়ে এনে বনপাড়া আমেনা হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং সেখানে রাত ১১টার দিকে ফারুকের মৃত্যু হয়।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বড়াইগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু সিদ্দিক জানান, ঋণের দায়ে ওই দম্পতি অনেকটাই বিধ্বস্ত ছিলেন। উপায়ান্তর না দেখে তারা একসঙ্গে বিষ খেয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।

শুক্রবার বিকেলে ময়নাতদন্তের পর রাত ১১টার দিকে বিথীর লাশ দাফন করা হয়েছে। শনিবার সকালে ফারুকের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য নাটোর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছ। এ ব্যাপারে থানায় দুটি অপমৃত্যু মামলা রুজু করা হয়েছে বলেও জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।

আইএনবি/বিভূঁইয়া