নিজস্ব প্রতিবেদক: স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকারের পতনের আগে লক্ষীপুরের ইউএনও আরিফুর রহমানকে নানাভাবে হেনস্থা ও মিথ্যা অভিযোগে জর্জরিত করা হয়েছিলো।
জানা যায়, সৈরশাসকের একনিষ্ট লোক লক্ষ্মীপুরের কুখ্যাত তাহের চেয়ারম্যানের ছেলে উপজেলা চেয়ারম্যান এ কে এম সালাহ উদ্দিন টিপু এলাকায় পরিচিতো ছিলো মাফিয়া হিসেবে। যার ফলে সে কোন নিয়মনীতির তোয়াক্কা করতো না। সে প্রভাবশালী হওয়াই তার ভয়ে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান তো দুরে থাক, লক্ষ্মীপুরের কাকপক্ষীও তার ভয়ে কখনো মুখ খুলতে সাহস পেত না। উপজেলা রাজস্ব থেকে নেয়া উন্নয়ন প্রকল্প, টি আর কাবিখা, কাবিটা থেকে নেয়া প্রকল্প সহ উপজেলায় লুটপাট করাই ছিল তার প্রধান কাজ। কাজ বাস্তবায়ন করা ছাড়া বিল করাই ছিল তার একমাত্র নেশা। তাছাড়া প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা দীর্ঘ সাত বছর একই স্টেশনে থাকায় তার সাথে উপজেলা চেয়ারম্যান মাফিয়া টিপুর আলাদা সখ্যতা তৈরি হয়। ইউএনও আরিফুর রহমান সেখানে যোগদান করার পর এসব লুটপাট বন্ধে সোচ্চার হন। টি আর কাবিখা সহ সকল কাজ বাস্তবায়ন না করে তিনি কখনো বিল পরিশোধ করতেন না। তখন উপজেলা নির্বাচন সামনে থাকায় কুখ্যাত উপজেলা চেয়ারম্যান টিপু লুটপাট বন্ধ করে দিলেও ইউএনওকে কিছু বলেননি।
পরবর্তীতে সে গত ২৯ শে মে তৃতীয়বারের মত উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। নির্বাচিত হয়েই সে ৪ঠা জুন থেকে ইউএনওর উপর নানাভাবে প্রভাব বিস্তারের মাধ্যমে হেনস্থাসহ মিথ্যা অভিযোগে জর্জরিত করতে থাকেন। একপর্যায়ে তিনি ইউএনওকে বলেন আমি আর আগের উপজেলা চেয়ারম্যান নই, এতদিন নির্বাচন সামনে থাকায় আপনাকে কিছু বলিনি। এখন আমি যা বলব তাই হবে। তারপর তিনি ইউএনওকে নির্দেশ দেন প্রকল্প নিতে এবং আরও জানান প্রকল্প বাস্তবায়ন হবে না কিন্তু বিল দিয়ে দিতে হবে। ইউএনও তাতে রাজি হয়নি। এক পর্যায়ে তিনি ইউএনওর উপর আরো বেশি চাপ তৈরি করতে থাকেন। তখন ইউএনও তার উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবহিত করেন। কোনভাবেই যখন ইউএনওকে বাগে আনতে না পেরে সে তখন ষড়যন্ত্র করতে থাকে। একপর্যায়ে সে পুনরায় নির্বাচিত হওয়ার কথা বলে একবেলা ভাত খেতে চান এ কথা বলে সে তার দলীয় নেতাকর্মী ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের দাওয়াত দেন। পরবর্তীতে এ দাওয়াতকেই ভিন্ন নাম দিয়ে তিনি বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে সংবাদ প্রচার করান। নিউজ এর সত্যতা না থাকলেও ইউপি চেয়ারম্যানরা টিপুর ভয়ে এ নিয়ে কোন টু শব্দ করার সাহস পাননি। পরক্ষণে সম্প্রতী কোটা বিরোধী আন্দোলনে টিপুর গুলিতে চারজন ছাত্র নিহিত হয়। গত ৫ই আগস্ট সৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকারের পতনের স্থানীয় উত্তেজিত জনতা টিপুর বাড়িঘর পুড়িয়ে দেয়। সে এখন পলাতক রয়েছেন।
এ ব্যাপারে লক্ষীপুরের সাবেক ইউএনও আরিফুর রহমান বলেন, উপজেলা চেয়ারম্যান এ কে এম সালাহ উদ্দিন টিপু সম্প্রতী সরকার পতনের আগে আমাকে নানাভাবে হেনস্থা ও মিথ্যা অভিযোগে জর্জরিত করেছিলেন। বর্তমানে আমাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার ইউএনও হিসেবে বদলী করা হয়েছে। ইনশাল্লাহ্ সর্বোচ্চটুকু দিয়ে আমি আমার দায়িত্ব পালন করে যাবো।
আইএনবি/কে/বিভূঁইয়া