মাদারীপুরে হঠাৎ গণপিটুনিতে মৃত্যু বেড়েছে

মাদারীপুর প্রতিনিধি: মাদারীপুরে চোর-ডাকাত সন্দেহে বেড়েছে গণপিটুনিতে মৃত্যুর সংখ্যা। চুরি-ডাকাতি বেড়ে যাওয়া ও মূল অপরাধীদের বিচার না হওয়ায় এমন হত্যাকাণ্ড বেড়েছে বলে মত আইনজীবীদের। শুধু চলতি বছরেই পাঁচ জনকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। যদিও পুলিশ বলছে, সচেতনতার অভাবেই মানুষ আইন হাতে তুলে নিচ্ছে।

অনুসন্ধান করে জানা গেছে, গত ২০ নভেম্বর মধ্যরাতে জেলার শিবচরের সম্ভুক এলাকার ভ্যানচালক দেলোয়ার হাওলাদারের ঘরে ঢুকে মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে যায় অস্ত্রধারী দুর্বৃত্তরা। পরে পাশের হালিম ফকিরের ঘরের দরজা ভাঙার চেষ্টা করলে ধাওয়া দেয় এলাকাবাসী। বাকিরা পালিয়ে গেলেও মির্জন খালাসী ও হাসমত বেপারীকে গণপিটুনি দিলে দুই জনেরই মৃত্যু হয়। এর আগে ৭ নভেম্বর কালকিনির রাজারচরে মিলন চন্দ্র হালদার, ৯ মে রাজৈরের পূর্বনাগরদিতে গোবিন্দ রায় নামে এক যুবককে গণপিটুনি দিলে তারা মারা যায়। এছাড়া চোর-ডাকাত সন্দেহে চোখ উত্পাটনসহ ঘটেছে মারধরের একাধিক ঘটনা।

জেলা পুলিশের তথ্যমতে, চলতি বছরে গণপিটুনিতে পাঁচ জনের মৃত্যুর ঘটনায় ৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এদিকে পাঁচটি থানায় শতাধিক চুরির মামলায় গ্রেফতার করা হয় ২৫০ জনকে। আর ১০টি ডাকাতির মামলায় গ্রেফতার হয়েছে ৪৫ জন।

মাদারীপুরে জেলা আইনজীবী সমিতির কার্যকরি সদস্য অ্যাডভোকেট সাইদুর রহমান সাগর বলেন, সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা ব্যাহত হচ্ছে। পুলিশ-প্রশাসনের যেভাবে নিরাপত্তা দেওয়ার কথা ছিল, সেটার ঘাটতি থাকায় চুরি-ডাকাতি হচ্ছে। এর থেকেই সাধারণ জনগণ আইন হাতে তুলে নিচ্ছে। অনেক সময়, এক জন শত্রুকে গণপিটুনি দিয়ে হত্যা করে, প্রচার করা যেতে পারে সে চোর বা ডাকাত ছিল। তাই এটাকে বন্ধ করা উচিত।

এ বিষয়ে মাদারীপুরের পুলিশ সুপার মাসুদ আলম খান জানান, সচেতনতার অভাবেই এমন ঘটনা বারবার ঘটছে। প্রতিরোধে গড়ে তুলতে হবে সামাজিক আন্দোলন। আইন যারা হাতে তুলে নেয়, সবাইকে আইনের আওতায় আসতে হবে। প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের বিচার হলে সমাজ থেকে এমন অপরাধ কমে যাবে।’

মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মারুফুর রশিদ খান বলেন, এক বছরে যতগুলো ঘটনা ঘটেছে সবগুলোই গ্রামগঞ্জে হয়েছে। কাউকে চোর বা ডাকাত সন্দেহ মনে হলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে তুলে দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। যদি কেউ অপরাধ করে, আইন-আদালত তার বিচার করবে। কাউকে গণপিটুনি দিয়ে মেরে ফেলা এটাও একটি হত্যাকাণ্ড।

 

আইএনবি/বিভূঁইয়া