নড়াইলের পুঁটি মাছের শুঁটকি যাচ্ছে বিদেশে

নড়াইল প্রতিনিধি: নড়াইল জেলার কালিয়া উপজেলার হাড়িয়ারঘোপ গ্রামের সনজিত হাজরা প্রায় ৪০ বছর ধরে মাছ কেনাবেচা করে সংসার চালাচ্ছেন।

পাশাপাশি গত আট বছর ধরে তিনি দেশি পুঁটি মাছের শুঁটকি বানিয়ে বিক্রি করছেন।

বর্তমানে তার পুঁটির শুঁটকি দেশের গণ্ডি পেরিয়ে যাচ্ছে বিদেশে।
বিল প্রধান নড়াইলে ছোট-বড় সব মিলিয়ে প্রায় ৫৭টি বিল রয়েছে। এসব বিলে বছরের চার মাস পুঁটিসহ বিভিন্ন জাতের প্রচুর ছোট মাছ ধরা পড়ে। সংগৃহীত পুঁটি মাছ কয়েক দফা শুকিয়ে বস্তায় ভর্তি করে পাঠানো হচ্ছে দেশের বিভিন্ন স্থানে। সেখান থেকে বড় সাইজের পুঁটি মাছ প্রক্রিয়াজাত করে পানি ও তেল মিশ্রিত চ্যাপা শুঁটকি তৈরি হচ্ছে। দেশের বাজার ছাড়িয়ে এখন তা যাচ্ছে ভারতের বিভিন্ন স্থানে। আর ছোট সাইজেরগুলো যায় মাছের খাবার তৈরির কারখানায়।

জেলায় প্রতি বছর প্রায় দেড় থেকে দুই কোটি টাকার শুঁটকি মাছ কেনাবেচা হচ্ছে। প্রতি মণ শুঁটকি মাছ বর্তমানে সাত হাজার টাকা থেকে শুরু করে ১০ হাজার টাকা করে বিক্রি হচ্ছে।

জেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, জেলার মাইজপাড়া এবং শিংগাসোলপুর এ দুটি ইউনিয়নে মোট ছয়টি মাছের খোলা (মাছ শুকানোর লম্বা মাচা) রয়েছে। এখান থেকে মৌসুমে প্রায় আড়াই হাজার মণ শুঁটকি মাছ উৎপাদন হয়। পাইকারি ক্রেতারা আসেন ফারিদপুর, গোপালগঞ্জ, বরিশাল, নোয়াখালীসহ বিভিন্ন জেলা থেকে। পরে শুঁটকি মাছ ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লার দাউদকান্দি হয়ে ভারতের ত্রিপুরা ও অন্য রাজ্যে চলে যায়।

সদর উপজেলার মির্জাপুর গ্রামের ভীম বিশ্বাস বলেন, মাছের শুঁটকি তৈরিতে কোনো ক্ষতিকর কেমিক্যাল ব্যবহার করা হয় না। যে কারণে বর্তমানে জেলার গন্ডি পেরিয়ে দেশের অন্যান্য জেলায় ও ভারতে যাচ্ছে আমার শুঁটকি। মৌসুমে প্রায় ১৫০ মণ শুঁটকি মাছ উৎপাদন হয় এখানে।

এ বিষয় জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এইচ. এম. বদরুজ্জামান বলেন, শুঁটকির ব্যবসা বাড়াতে জেলা মৎস্য অধিদফতর সব ধরনের সহযোগিতা করছে, ভবিষ্যতেও করবে। সব কিছু মিলিয়ে নড়াইল শস্য ও মৎস্য ভাণ্ডার নামে খ্যাত। এ অঞ্চলের ফসলাদি ও মাছ সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে সংরক্ষণ করতে পারলে দেশের অর্থনীতি ব্যাপক উন্নতি লাভ করবে বলে আশা করি।

 

আইএনবি/বিভূঁইয়া