আইএনবি ডেস্ক:ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কাউন্টার টেররিজম ও ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার এক নেতাকে গ্রেফতার করেছে । তার নাম আব্দুর রহিম। যাকে সংগঠনটির ‘প্রধান অস্ত্র সরবরাহকারী’ বলে জানিয়েছে পুলিশ।
গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে বুধবার গাজীপুরের কালিয়াকৈর থেকে আব্দুর রহিমকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তার কাছে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও বিস্ফোরক পাওয়া যায়।
পাহাড়ে জঙ্গি সংগঠনের খবরে গত বছর যৌথ অভিযান শুরু হলে আব্দুর রহিম সমতলে আত্মগোপন করেন। গ্রেফতারের পর তাকে নিয়েই বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়িতে অভিযান চালানো হয়। এ সময় গহিন বনে মাটিতে পুঁতে রাখা ড্রামে অস্ত্র ও বোমা তৈরির সরঞ্জাম পাওয়া যায়। গতকাল শুক্রবার রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান অতিরিক্ত কমিশনার (সিটিটিসি) মো. আসাদুজ্জামান।
সিটিটিসির প্রধান বলেন, রহিমের বিরুদ্ধে ডাকাতি, অপহরণ, অবৈধ অস্ত্র, বনভূমি ধ্বংসসহ বিভিন্ন অভিযোগে নাইক্ষ্যংছড়ি ও কক্সবাজারের রামু থানায় ১২টি মামলার তথ্য পাওয়া গেছে। রহিমের অস্ত্রের উত্স সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা জিজ্ঞাসাবাদে জানার চেষ্টা করব এই অস্ত্রের উত্স কোথায়। দেশের বাইরে কারো সঙ্গে তাদের যোগাযোগ রয়েছে কি না। ‘তাদের ট্রেনিং ক্যাম্পে আইইডি (ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস) তৈরির প্রশিক্ষণ দেওয়া হতো বলে আমরা জেনেছিলাম। কেমিক্যাল যেহেতু আমরা পেয়েছি, আমরা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করব কোনো জায়গায় তারা সরবরাহ করেছে কি না।’
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ২০২৩ সালের ২৩ জুন শারক্বীয়ার ‘মাস্টারমাইন্ড’ শামিন মাহফুজকে গ্রেফতার করা হয়। তাকে গ্রেফতারের পর সংগঠনটির প্রশিক্ষণ,অস্ত্র-গুলির উত্স, অর্থায়ন সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। শামিনকে গ্রেফতারের আগে তার সহযোগী ইয়াসিন ও অস্ত্র সরবরাহকারী কবির আহাম্মদকে গত বছরের ৮ জানুয়ারি গ্রেফতার করা হয়।
‘জিজ্ঞাসাবাদে শামিন মাহফুজ জানায়, বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন কুকি-চীন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) বা বম পার্টি শারক্বীয়ার সদস্যদের অস্ত্র ও প্রশিক্ষণ দেবে এরকম একটা চুক্তি হয়েছিল তাদের মধ্যে। স্থানীয় অপরাধী কবির আহাম্মদ ও আব্দুর রহিমের সঙ্গেও শারক্বীয়ার নেতারা যোগাযোগ করেন। তারাও জঙ্গি সংগঠনটিকে অর্থের বিনিময়ে অস্ত্র ও গোলাবারুদ সরবরাহ করছিলেন।’
সিটিটিসি প্রধান বলেন, নও মুসলিমদের নিয়ে কাজ করার আড়ালে জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার গড়ে তোলেন শামিন মাহফুজ। পরে কবির ও রহিমকে সংগঠনে যুক্ত হওয়ার ‘দাওয়াত’ দেন। তারা অস্ত্র সরবরাহ করছিলেন। কিন্তু গত বছর পাহাড়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যৌথ অভিযান শুরু হলে আব্দুর রহিম আত্মগোপনে যান।
রহিম কক্সবাজার ও বান্দরবান এলাকায় ‘রহিম্ম্যা ডাকাত’ নামে পরিচিত জানিয়ে পুলিশ বলছে, তার দেওয়া তথ্যে দেশি-বিদেশি পিস্তল ও বন্দুক, গুলি, কার্তুজ, ধারালো অস্ত্র, দুরবিন, গ্যাস মাস্ক, ওয়াকিটকি, অ্যাসিড ও হাতুড়ি উদ্ধার করা হয়েছে।
আইএনবি/বিভূঁইয়া